মঙ্গলবার, ২৬ জুন, ২০১২

কুরআন-হাদীছের আলোকে শবে বরাত - পর্ব ০২



ভূমিকাঃ

এতদিন পর্যন্ত শবে বরাতকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণীর মানুষ বাড়াবাড়িতে লিপ্ত ছিলতারা এ রাতটি উপলক্ষে নানা অনুচিত কাজকর্ম এবং রসম-রেওয়াজের অনুগামী হচ্ছিলউলামায়ে কেরাম সবসময়ই এসবের প্রতিবাদ করেছেন এবং এখনো করছেন

আবার ইদানিং আবার এক শ্রেণীর মানুষের মধ্যে ছাড়াছাড়ির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তাদের দাবী হল, ইসলামে শবে বরাতের কোন ধারণা নেইএ ব্যাপারে যত রেওয়ায়েত আছে সব মওযু বা যয়ীফএসব অনুযায়ী আমল করা এবং শবে বরাতকে বিশেষ কোন ফযীলতপূর্ণ রাত মনে করা
শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয নয়তারা এসব বক্তব্য সম্বলিত ছোটখাট পুস্তিকা ও লিফলেট তৈরী করে মানুষের মধ্যে বিলি করে

বাস্তব কথা হল, আগেকার সেই বাড়াবাড়ির পথটিও যেমন সঠিক ছিল না, এখনকার এই ছাড়াছাড়ির মতটিও শুদ্ধ নয় ইসলাম ভারসাম্যতার দ্বীন এবং এর সকল শিক্ষাই প্রান্তকতা মুক্ত সরল পথের পথ নির্দেশ করে

শবে বরাতের ব্যপারে সঠিক ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান হল, এ রাতের ফযীলত সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিতসম্মিলিত কোন রূপ না দিয়ে এবং এই রাত উদযাপনের বিশেষ কোন পন্থা উদ্ভাবন না করে বেশি ইবাদত করাও নির্ভরযোগ্য রেওয়াত দ্বারা প্রমাণিত এই রাতকে অন্য সব সাধারণ রাতের মতো মনে করা এবং এই রাতের ফযীলতের ব্যাপারে যত হাদীস এসেছে, তার সবগুলোকে মওযু বা যয়ীফ মনে করা যেমন ভুল, অনুরূপ এ রাতকে শবে কদরের মত বা তার চেয়েও বেশি ফযীলতপূর্ণ মনে করাও ভিত্তিহীন ধারণা

মুসলিম উম্মাহের মাঝে রাতটির এহেন চর্চা না আজকে-এই মাত্র জন্ম নিয়েছে, না বছর কয়েক আগে, না একটি মাত্র যুগের তফাতে এর আগমন ঘটেছেবরং ইসলামের শুরু লগ্ন থেকে যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর ধরেই এর চর্চা চলে আসছেআবার এমনও নয় যে, কারো ভিন্ন প্রক্রিয়ার স্পন্দনে রাতটির গুরুত্ব মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছেবরং এ রাতের ফজীলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে যেমনি অপ্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত রয়েছে তেমনি বেশ কিছু হাদীছের স্পষ্ট বক্তব্যের মাধ্যমে এ রাতের মাহাত্ম-গুরুত্ব ও আমলসমূহ স্বীকৃত-প্রমাণিত

এ সকল কারণে যুগ যুগ ধরে সকল ওলী বুজুর্গ, আহলে হক্ব নবীর সাচ্চা উম্মত শবেবারাতের মর্যাদা দিয়ে এসেছেন ওলামা-মুহাদ্দিছীন, আওলিয়া-বুযুর্গানেদ্বীন, ফুকাহা-আইম্মায়ে মুজতাহেদীনের কাছে এ রাতের গুরুত্ব-মাহাত্ম ও ফজীলত স্বতঃস্বীকৃত তারা সুস্পষ্ট করে বলে গেছেন শবেবরাতে যে কোন ইবাদত একটি মুস্তাহাব ও ঐচ্ছিক আমল-এটাকে অস্বীকার করা বা গুরুত্বহীন বলা যেমনিভাবে কুরআন-হাদীছকে অস্বীকার করার নামান্তর ঠিক তেমনিভাবে একে পুঁজি করে নিজের পক্ষ থেকে বিদআতে সায়্যিআহ যুক্ত করা বা এটাকে পার্থিব কোন আনন্দ উসবের ন্যায় মনে করা সাংঘাতিক ধরণের গুনাহের কাজ

ইসলামে শবে বরাত বলতে কিছু নেই- এ ধারণাটির উপত্তি খুব বেশি দিন আগের নয়, যারা এ কথা বলে থাকেন, তারা সবাই মিথ্যুক এবং ফিতনা সৃষ্টিই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্যটিভি, রেডিও ও তথ্যপ্রযুক্তির পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে তারা ইসলামের নামে মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টির করার এবং নবীর সুন্নাত থেকে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছেনআর অবস্থাটা এমন দাড়িয়েছে যে, তাদের সামনে দলিল প্রমাণ উপস্থাপন করলেও তারা তা মানতে নারাজ

হুজুরে পাক (সঃ) বলেছেনঃ আমার পরবর্তী উম্মতেরা পূর্ববর্তীদের নিচু চোখে দেখবেতারা তাদের ভসর্না করবে এবং বলবে যে তারা ভুল করেছে এবং ভুল বুঝেছে

এই কথার সত্যতা আজ আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিআমরা এখন দেখতে পাই, কিছু তথাকথিত উলামা পূর্ববর্তী জগত বিখ্যাত বুজুর্গদের সমালোচনায় দিনরাত মগ্ন থাকেনএমনকি তাদের সাহাবাদের সমালোচনা করতেও দেখা যায় !! আল্লাহপাক আমাদের জিহবাকে হেফাজত করুনআমীন

শবে বরাত ও কোরআনঃ

পবিত্র কোরআনের ২৫ তম পারা ও ৪৪ নং সূরা দুখানের শুরুতে যে পাঁচটি আয়াত রয়েছে সে আয়াতগুলোই মূলত শবে বরাত ও পবিত্র কোরআন - এ বিষয়ক আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু

তাফসীরে কবীর
তাফসীরে রুহুল মাআনী
তাফসীরে রুহুল বায়ান
তাফসীরে কুরতুবী
তাফসীরে তবরী
তাফসীরে বগবী
তাফসীরে খাযেন
তাফসীরে ইবনে কাসির ইত্যাদি

পবিত্র কোরআনের এ সমস্ত বড় বড় তাফসীর গ্রন্থগুলোর মাঝে বিচার বিশ্লেষণ করার পর অভিজ্ঞ আলেমদের নিকট এ কথা সুস্পষ্ট যে, উক্ত আয়াতের " লাইলাতুম মুবারাকাহ " (বরকতময় রাত) শব্দের সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য তাফসীর হলো শবে ক্বদর; শবে বরাত নয়তবে সাথে সাথে জমহুর উলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্ত এও যে, প্রথম মত অগ্রাধিকার পেলেও (অর্থা শবে ক্বদর) দ্বিতীয় মতকে (শবে বরাত) উপেক্ষা করার কোন অবকাশ নেই

শবে বরাত ও হাদীছঃ

শবে বরাত ও তার ফাযায়েল সম্পর্কিত অনেক হাদীসই হাদীসের কিতাবে দেখতে পাওয়া যায়তার মধ্যে কিছু হাদীস সহীহ, কিছু হাদীছ হাসান, কিছু জঈফ (তবে অতি দুর্বল নয়)তদুপরি এ জঈফ হাদিছগুলো বহু সহীহ ও হাসান হাদীছের সমর্থন ও সহযোগিতায় আমলের যোগ্য হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছেযা উসূলে হাদিছের সর্বসম্মত নীতিমালা

ইসলামী শরীয়তের দ্বিতীয় দলীল হলো হাদীছআর হাদীছ দ্বারা শবে বরাতের ফজীলত সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিততাই কুরআনে শবে বরাতের কথা নেই বলে এর অস্তিত্ব অস্বীকার করার মানেই হলো মহানবী (সঃ) এর হাদীছ অস্বীকার করাএটা কুরআনের দোহাই দিয়ে হাদীছ অস্বীকার করারই একটি চক্রান্ত

শবে বরাত ও সাহাবায়ে কেরাম (রঃ)

শবে বরাতের সাথে সংশ্লিষ্ট হাদীছসমূহের বর্ণনাকারিদের মধ্যে অনেক বড় বড় ( এক ডজনের মত ) সাহাবাও রয়েছেনযাদের কয়েকজনের পবিত্র নাম নিম্নে প্রদত্ত হলোঃ

ক) হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রঃ)
খ) হযরত আলী (রঃ)
গ) হযরত আয়শা (রঃ)
ঘ) হযরত আবু হুরায়রা (রঃ)
ঙ) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রঃ)
চ) হযরত আবু মুসা আশআরী (রঃ)
ছ) হযরত আউফ ইবনু মালিক (রঃ)
জ) হযরত মুআয ইবনু জাবাল (রঃ)
ঝ) হযরত আবু ছালাবাহ আল খুসানী (রঃ)
ঞ) কাছীর ইবনে মুররা আল হাজরমী (রঃ)

শবে বরাত ও তাবেয়ীঃ

শামের বিশিষ্ট তাবেয়ী যেমনঃ

ক) হযরত খালেদ ইবনে মা'দান (রহঃ)
খ) ইমাম মাকহূল (রহঃ)
গ) লোকমান ইবনে আমের (রহঃ)

প্রমূখ উচ্চমর্যাদাশীল তাবেয়ীগণ শা'বানের পনেরতম রজনীকে অত্যন্ত মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখতেন এবং এতে খুব বেশী বেশী ইবাদত ও বান্দেগীতে মগ্ন থাকতেন বলে গ্রহণযোগ্য মত পাওয়া যায়

শবে বরাত ও সিহাহ সিত্তাহঃ

অনেকেই আছেন আমাদের মধ্যে যারা কথায় কথায় সিহাহ সিত্তার দলীল দেখাতে বলেন এবং সিহাহ সিত্তাহ ছাড়াও যে হাদীসের আরও বিশাল ভান্ডার আছে, কিতাব আছে যেখানে শত শত সহীহ হাদীস বিদ্যমান, সেগুলোকে অস্বীকার করার চেষ্টা করে থাকেনতাদের জ্ঞাতার্থেই বলছি,

সিহাহ সিত্তারই দুটি কিতাব - তিরমিযী শরীফ ও সুনানে ইবনে মাজাহতে শুধু যে শবে বরাত এর ফজীলত সম্পর্কিত হাদীস বর্ণিত আছে তা নয়, বরং ইমাম তিরমিযী (রহঃ) তাঁর তিরমিযী শরীফে এবং ইমাম নাসাঈ (রহঃ) তাঁর সুনানে পনের শাবানের ফজীলত নিয়ে আলাদা বাব বা অধ্যায়ই লিখেছেন

এর মাধ্যমেই আমরা ইমামদ্বয়ের কাছে শাবানের পনের তারিখের কি পরিমাণ গুরুত্ব ছিল, তা কিছুটা আঁচ করতে পারি

শবে বরাত ও অন্যান্য হাদীছগ্রন্থঃ

সিহাহ সিত্তার বাইরেও অনেক ইমামগণ তাদের জগতবিখ্যাত বড় বড় হাদীসগ্রন্থে শবে বরাত ও তার ফজীলত নিয়ে হাদীস বর্ণনা করেছেনযেমনঃ

ইমাম তাবরানী রচিত "আল কাবীর" এবং "আল আওসাত"
ইমাম ইবনে হিব্বান রচিত "সহীহ ইবনে হিব্বান"
ইমাম বায়হাকী রচিত "শুআবুল ঈমান"
হাফেয আবু নুআইম রচিত "হিলয়া"
হাফেয হায়ছামী রচিত "মাজমাউয যাওয়ায়েদ"
ইমাম বাযযার তাঁর "মুসনাদ" এ
হাফিয যকী উদ্দীন আল মুনযিরী রচিত "আততারগীব ওয়াত-তারহীব"
ইমাম আহমদ তাঁর "মুসনাদ" এ
মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা
১০হাফেয আব্দুর রাজ্জাক এর "মুসান্নাফ" এ

আমরা শবে বরাতের ফজীলত সম্পর্কিত বহু হাদীস দেখতে পাই

শবে বরাত ও মুফাসসিরে কেরামঃ

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, সূরা দুখানের তাফসীরে অধিকাংশ যুগবিখ্যাত মুফাসসিরে কেরামের সিদ্ধান্ত এই যে, "লাইলাতুম মোবারকাহ" বলতে "শবে ক্বদর"ই উদ্দেশ্য, শবে বরাত নয়; যদিও অনেক মুফাসসিরে কেরামই আবার শবে বরাতকেই বুঝিয়েছেন

কিন্তু এখানে গভীরভাবে লক্ষ্যণীয় যে, যারা এ "লাইলাতুম মুবারাকাহ" শব্দের ব্যাখ্যায় শবে ক্বদরকে প্রাধান্য দিয়েছেন, তারা কেউই কিন্তু শবে বরাত নামক মধ্য-শাবানের রাতের গুরুত্বের ব্যাপারে যে সব হাদীছ বর্ণিত আছে সেগুলোকে ভিত্তিহীন বলে মত প্রকাশ করেননিবরং তারা শুধুমাত্র উক্ত আয়াতে "লাইলাতুম মুবারাকাহ" এর ব্যাখ্যা যে শবে বরাত নয় শুধু এ কথাটিই ব্যক্ত করেছেন ঠিক তেমনিভাবে যে সব তাফসীরবিশারদ উক্ত আয়াতে লাইলাতুম মুবারাকাহ এর ব্যাখ্যায় শবেবরাত বলে সাব্যস্ত করেছেন, তারাও কখনও কুরআন অবতরণের রাত্রি, মহা পবিত্র রজনী শবে ক্বদর কে গুরুত্বহীন বলে মত পোষণ করেন নিবরং তা অধিক গুরুত্বপূর্ণ রাত বলেই সাব্যস্ত করেছেন

আরও অধিক গুরুত্বপূ্র্ণ বিষয় হল, ইসলামী শরীয়তে সত্যিকার অর্থেই যদি শবে বরাত ও এর ফজীলতের কোন অস্তিত্বই না থাকত, শবে বরাতের ফজীলত সম্পর্কিত হাদীসগুলো সবই খুব দুর্বল ও বানোয়াট হত, তাহলে এসব বড় বড় মুফাসসিরে কেরাম সূরা দুখানের তাফসীরগ্রন্থে এ কথাটি অবশ্যই উল্লেখ করতেন যে, শবে বরাত বলতে তো কিছু নেই, তাই লাইলাতুম মোবারকার অর্থ শবে বরাত কখনোই হতে পারে না; এটা ভ্রান্ত আক্বীদা বা বিদয়াতকিন্তু তারা কেউই তা উল্লেখ করেননি, শুধুমাত্র বলেছেন লাইলাতুম মোবারকা বলতে এখানে শবে ক্বদরকে বুঝানো হয়েছে, শবে বরাতকে নয়

মোট কথা প্রায় সকল তাফসীরবিশারদ শবে ক্বদরতো মানতেনই, তার সাথে সাথে শবে বরাতকেও অস্বীকার করতেন নাঅধিকাংশ মুফাসসির প্রথম মতকে (শবে ক্বদর) জোরালোভাবে উল্লেখ করেছেনপাশাপাশি দ্বিতীয় মত তথা শবেবরাতকেও উপেক্ষা করেন নিবরং তাদের মধ্য থেকে আবার প্রায় সকল মুফাসসির তৃতীয় মতের পক্ষেও দলীল প্রমাণ পেশ করেছেন

শবে বরাত ও মুহাদ্দিসীনে কেরামঃ

শবে বরাতের ফজীলত সম্পর্কিত হাদীসগুলোকে মুহাদ্দিসীনে কেরামেরা বরাবরই সনদসহ বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেছেন এবং তার মধ্যে কিছু হাদীসকে সহীহ, কিছুকে হাসান (সহীহের অন্তর্ভুক্ত), আর কিছুকে দুর্বল (কম মাত্রাসম্পন্ন) বলে রায় দিয়েছেন মুহাদ্দিছগণ যদিও কোন কোন হাদীছের দোষ ত্রুটি আলোকপাত করেছেন কিন্তু কেউ সেগুলোকে ভিত্তিহীন জাল হাদীছ বা অগ্রহণযোগ্য হাদীছ বলেন নি, এমনকি তারা কোন হাদীসের মতনকেও যঈফ বলেননি উপরন্তু তারা উসূলে হাদিসের নীতি অনুযায়ী শবে বরাতের ফজীলত আছে বলে মত প্রদান করেছেন এবং এ রাতে সাহাবারা, সলফে সালেহীনরা ইবাদতে মগ্ন থাকতেন বলে তাদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন

এসব মুহাদ্দিসীনদের মধ্যে অন্যতম হলেনঃ

হাফিয নুরুদ্দীন আলী ইবনে আবু বকর আল হাইসামী (রহঃ)
হাফিয ইবনে রজব আল হাম্বলী (রহঃ)
ইবনু হিব্বান (রহঃ)
আদনান আবদুর রহমান (রহঃ)
ইমাম বায়হাকী (রহঃ)
হাফিয যকী উদ্দীন আল মুনযিরী (রহঃ)
ইমাম বাযযার (রহঃ)
ইমাম উকায়লী (রহঃ)
ইমাম তিরমিযী (রহঃ)
১০হামযা আহমাদ আয যায়্যান (রহঃ)
১১ইমাম যুরকানী (রহঃ)
১২আল্লামা ইরাকী (রহঃ) প্রমুখ

শবে বরাত ও অন্যান্য বুজুর্গানে দ্বীনঃ

উপরে উল্লেখিত সাহাবা, তাবেয়ীন, মুফাসসিরে কেরাম, মুহাদ্দিসীনরা ছাড়াও অনেক বড় বড় বুজুর্গানে দ্বীনও শবে বরাতের ফজীলত স্বীকার করেছেন এবং এ দিনে অনেক নফল ইবাদত করেছেনযেমনঃ

উমর বিন আবদুল আযীয (রহঃ)
ইমাম আল শাফী (রহঃ)
ইমাম আল আওযায়ী (রহঃ)
আতা ইবনে ইয়াসার (রহঃ)
হাফিয যয়নুদ্দীন আল ইরাক্বী (রহঃ)
আল্লামা ইবনুল হাজ্ব আল মক্কী (রহঃ)
ইমাম সুয়ুতী (রহঃ)
ফিক্বহে হানাফীর ইমাম মুহাম্মদ ইবনু আলী আল হাসফাকী (রহঃ)
ইমাম নববী (রহঃ)
১০হাম্বলী মাযহাবের সুপ্রসিদ্ধ ফক্বীহ আল্লামা শায়খ মানসূর ইবনু ইউনুস (রহঃ)
১১আল্লামা ইসহাক ইবনুল মুফলিহ
১২আল্লামা ইবনু নুজাইম হানাফী (রহঃ)
১৩আল্লামা হাসান ইবনু আম্মার ইবনু আলী আশ-শারাম্বলালী আল হানাফী (রহঃ)
১৪আল্লামা আব্দুল হাই লখনভী (রহঃ)
১৫আল্লামা আবুল ফারাজ ইবনুল জাওযী
১৬শায়খ আলা উদ্দীন আবুল হাসান আল হাম্বলী (রহঃ)
১৭মোল্লা আলী কারী (রহঃ)
১৮ইমাম গাযালী (রহঃ)
১৯হযরত বড়পীর আব্দুল ক্বাদের জ্বীলানী (রহঃ)
২০ইমাম মুহাম্মদ আল জাযারী (রহঃ)
২১মাওঃ ইসলামুল হক্ব মুযাহেরী (রহঃ)
২২শায়খুল আদব হযরত আল্লামা এযায আলী (রহঃ)
২৩ইমাম আহমাদ (রহঃ)
২৪আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ)
২৫মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী (রহঃ)
২৬হাফিয মুহাম্মদ আব্দুর রহমান ইবনু আব্দির রহিম আল মুবারকপূরী (রহঃ)
২৭মুহাদ্দিছুল আসর আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী (রহঃ)
 ২৮হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহঃ)
২৯হযরত মাওলানা মুফতী আজীজুর রহমান সাহেব (রহঃ)
৩০মুফতী আজম মুফতী মোহাম্মদ শফী (রহঃ)
৩১তাঁরই ( মুফতী আজম মুফতী মোহাম্মদ শফী (রহঃ) ) এর সুযোগ্য সন্তান আল্লামা মুফতী মুহাম্মদ তাকী উছমানী (দাঃবাঃ)

প্রমুখ সহ আরও অনেক বুজুর্গানে দ্বীন

শবে বরাত ও কিতাবঃ

মুসলিম বিশ্বের মহামনীষীগণ কুরআন করীমের নির্ভরযোগ্য তাফসীরগ্রন্থ, হাদীছের ব্যাখ্যাগ্রন্থ এবং প্রায় বড় বড় আলেম নিজেদের রচিত কিতাবাদীতে কেউ সংক্ষেপিত আকারে কেউ বা সবিস্তারে শবেবরাতের ফজীলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে লিপিবদ্ধ করে গেছেনতাঁরা যেমন শবেবরাতে করণীয় ও বর্জনীয় দিকসমূহ আপন আপন গ্রন্থে লেখেছেন তেমনি বাস্তব জীবনে রাতটিকে কিভাবে চর্চায় আনা হবে তার নমুনা দেখিয়ে গেছেন

যেমনঃ

ক) পাঁচশত হিজরীর ইমাম গাযালী (রহঃ) রচিত এহইয়াউ উলুমিদ্দীন ( الدين علوم احياء )
খ) ৬০০ হিজরীর প্রারম্ভে হযরত বড়পীর আব্দুল ক্বাদের জ্বীলানী (রহঃ) এর গুনিয়াতুত তালেবীন
( الطالبين غنية )
গ) ৭০০ হিজরীর ইমাম মুহাম্মদ আল জাযারী (রহঃ) এর আদদোয়াউ ওয়াস সালাত ফী যওইল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ ( والسنة القرآن ضوء فى والصلوة الدعاء )
ঘ) ৭০০ হিজরীর ইমাম আবু জাকারিয়া ইবনে ইয়াহইয়া ইবনে শারফুদ্দীন নববী (রহঃ) এর রিয়াজুস সালেহীন
( الصالحين رياض )
ঙ) এগারশত হিজরীর শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ) এর মা ছাবাতা বিস সিন্নাহ ( بالسنة ثبت ما)
চ) তেরশত হিজরীর মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী (রহঃ) রচিত মিফতাহুল জান্নাহ ( الجنة مفتاح )
ছ) চৌদ্দশত হিজরীর হযরত আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) এর ওয়াজ ও তাবলীগ ( وتبليغ وعظ )
জ) মুফতী আজম মুফতী মোহাম্মদ শফী (রহঃ) এর হাকীকতে শবেবরাত ( براءت شب حقيقت )
ঝ) তাঁরই ( মুফতী আজম মুফতী মোহাম্মদ শফী (রহঃ) ) এর সুযোগ্য সন্তান আল্লামা মুফতী মুহাম্মদ তাকী উছমানীর (দাঃবাঃ) শবেবরাত ( براءت شب )
ঞ) মুফতী মীযানুর রহমান সাঈদ এর কুরআন-হাদীছের আলোকে শবেবরাত (গবেষণামূলক একটি অনবদ্য রচনা)

সহ অসংখ্য মূল্যবান গ্রন্থে লাইলাতুল বারাআত এবং মাহে শাবান প্রসঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা শবেবরাতের তাপর্য, মাহাত্ম ও মর্যাদার উপর সুস্পষ্ট প্রমাণ বহন করে

শবে বরাত ও সালাফী/আহলে হাদীছঃ

ইদানিং আমাদের কতক সালাফী বা গাইরে মুকাল্লিদ বন্ধুকে দেখা যায়, তারা নানা ধরণের লিফলেট বিলি করেনতাতে লেখা থাকে যে, শবে বরাত (লাইলাতুল নিসফি মিন শাবান) এর কোন ফযীলতই হাদীস শরীফে প্রমাণিত নেইঅথচ তাদের সবচেয়ে বড় গণ্যমাণ্য ইমাম, অধিকাংশ মাসয়ালা মাসায়েল ও ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে তারা যার উদাহরণ সবচেয়ে বেশি উল্লেখ করে থাকে, শায়খুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়্যাও (রহঃ) শবে বরাতের ফজীলতকে স্বীকার করেছেনতিনি এও বলেছেন যে, সাহাবারা, তাবেঈনরা এবং সালাফরাও (পূর্ববর্তী) এই রাতের বিশেষ মর্যাদা দিতেন

আবার আল্লামা ইবনে তাইমিয়্যা (রহঃ) এর শিষ্য ইবনে রজব হাম্বলীও (রহঃ) এই রাতের ফজীলতের কথা উল্লেখ করেছেন

অন্যদিকে হাদীসের তাহকিক তথা বিচার বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সালাফী/আহলে হাদীছরা যার সবচেয়ে বেশি ভক্ত, যার কিতবাদি অনুবাদ করে তারা প্রচার করে থাকেন, সময়কালের বিশিষ্ট মুহাদ্দিছ নাসিরউদ্দীন আলবানীও (রহঃ) শবে বরাতের কতিপয় হাদীসকে সহীহ বা হাসান বলেছেন

ঠিক তেমনি তাঁরই শিষ্য বর্তমান যুগের খ্যাতিমান হাদীছ পর্যালোচক শায়খ শুয়াইব আল আরনাউত্বও শবে বরাতের ফজীলত সম্পর্কিত কিছু হাদীসকে সহীহ বা হাসান বলেছেন

এখন সালাফী বা আহলের হাদীসের ঐসব বন্ধুরা আল্লামা ইবনে তাইমিয়্যা (রহঃ), শায়খ আলবানী (রহঃ) এর গবেষণা ও সিদ্ধান্ত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন আমি ওই সব ভাইদের কাছে বিনীতভাবে আরজ করতে চাই যে, আপনারা যদি শায়খ ইবনে বাযের (রহঃ) অনুসরণে বা নিজেদের তাহ্কীক মতো এই রাতের ফযীলতকে অস্বীকার করতে পারেন তাহলে যারা উপরোক্ত মুহাদ্দিস ও ফকীহগণের অনুসরণে উল্লেখিত হাদীসটির ভিত্তিতে এই রাতের ফযীলতের বিশ্বাস পোষণ করেন এবং সব ধরণের বেদআত রসম-রেওয়াজ পরিহার করে নেক আমলে মগ্ন থাকার চেষ্টা করেন তারাই এমন কি অপরাধ করে বসলেন যে, আপনাদেরকে তাদের পেছনে লেগে থাকতে হবে? এবং এখানকার উলামায়ে কেরামের দলীলভিত্তিক সিদ্ধান্তের বিপরীতে অন্য একটি মত যা ভুলের সম্ভাবনার উর্ধ্বে নয়, তা সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার করে তাদেরকে আলেম-উলামার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আস্থাহীন করা এবং বাতিলপন্থিদের মিশন সফল করতে সহায়তা দেওয়া কি সত্যিকার অর্থেই খুব বেশি প্রয়োজন? এতে তো কোন সন্দেহ নেই যে, আপনারা আপনাদের মতটিকে খুব বেশি হলে একটি ইজতেহাদী ভুল-ভ্রান্তির সম্ভাবনাযুক্তই মনে করেন এবং নিশ্চয়ই আপনারা আপনাদের মতটিকে একেবারে ওহীর মতো মনে করেন নাএকটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন, এরপর আপনাদের এই অবস্থানের যৌক্তিক কোন ব্যাখ্যা আর থাকে কি না?

আপনাদের প্রতি আমার সর্বশেষ অনুরোধ এই যে, দয়া করে এ রাতের ফযীলত ও আমল সম্পর্কে শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) [মৃ. ৭২৮ হিঃ] এর ইক্তিযাউস সিরাতিল মুস্তাকিম/৬৩১-৬৪১ এবং ইমাম যায়নুদ্দীন ইবনে রজব (রহঃ) [মৃ. ৭৯৫] এর লাতায়েফুল মাআরেফ ১৫১-১৫৭ পড়ুন এবং ভেবে দেখুন যে, তাদের এই দলীলনির্ভর তাহকীক অনুসরণযোগ্য, না শায়খ ইবনে বায (রহঃ) এর একটি আবেগপ্রসূত মতামত? যা হয়ত তিনি শবে বরাত নিয়ে জাহেল লোকদের বাড়াবাড়ির প্রতিকার হিসেবেই ব্যক্ত করেছেনকিন্তু এ কথা স্পষ্ট যে, বাড়াবাড়ির প্রতিকার কোন বাস্তব সত্য অস্বীকার করে নয়; বরং সত্য বিষয়টির যথাযথ উপস্থাপনের মাধ্যমেই হয়ে থাকে

মক্বা-মদীনা নয়, কুরআন-সুন্নাহই অনুসরণীয়

অনেকে আবার মানুষের মনে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে যে, মক্কা থেকে দ্বীন এসেছেমদীনা থেকে দ্বীন এসেছেমক্কা মদীনায় তো শবে বরাত পালন হয় না, তোমরা কোথা থেকে তা পেলে ??

তাদের জবাব হলঃ

রাসূল (সাঃ) মক্কাকে আদর্শ বানাননিমদীনাকে আদর্শ বানাননিআদর্শ বানিয়েছেন কিতাবুল্লাহ ও নবীজী সাঃ এর সুন্নাতকেআল্লাহর নবী ইরশাদ করেছেন যে,

"
আমি তোমাদের মাঝে দুটি বিষয় রেখে গেলাম, তোমরা ভ্রষ্ট হবেনা যদি এ দুটি আকড়ে ধরে রাখকিতাবুল্লাহ ও নবীর সুন্নত। "

{
মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-১৫৯৪}

আবার দেখুন ওরা একদিকে বলে যে, কুরআন সুন্নাহ ছাড়া কোন কিছুই দলিল নয়, তারাই আবার আরবের উদাহরণ টেনে বলে যে, কই, ওখানে তো শবে বরাত পালন হয় না !! ওদের একাজ কি দোষণীয় নয়?!

আর আমরা হানাফী মাযহাব মেনে চলি বলে হয়ে গেছি মুশরিক, আর ওরা আরবের লোকদের তাক্বলীদ করে খাঁটি মুমিন থাকে কি করে?

আবার দেখুন কোরআন হাদীসে কোথাও কোন উল্লেখ নেই যে পবিত্র মক্কা মদীনায় সবসময় নবীর সুন্নাত জিন্দা থাকবে, এটা কিন্তু তাদের নিজেদের আমলের দ্বারাও প্রমাণিতযেমনঃ হারাম শরীফ ও মসজিদে নববীতে এখনো রমযানে তারাবীহ নামায পড়ানো হয় ২০ রাকাআত, অথচ তারা বলে থাকে ৮ রাকাআত তারাবীহ পড়া সুন্নাত !! তাহলে এ ক্ষেত্রে তারা কেন মক্কা মদীনাকে অনুসরণ করে না ?? তখন আবার তাদের বক্তব্য হয়, আমরা কোরআন হাদীস মেনে চলি !! আবার তাদের এই বক্তব্যকে যদি ঠিক ধরে নি যে, তারাবীহ ৮ রাকাআত সুন্নাহ (যদিও তা মস্ত বড় ভুল), তাহলে তাদের ভাষ্য অনুযায়ী মক্কা মদীনার ইমামরা এ ক্ষেত্রে সুন্নাহ মানেন না !!

আবার বর্তমান আরবের শায়েখদের আমলই যদি শরীয়ত হয়, তাহলে আরবের অনেক শায়েখ এক সাথে ১৪জন বিবি রাখছেআপনারা কি তাহলে এটাকে অনুসরণ করবেন? ওদের সিডি দেখিয়ে মানুষকে বলবেন যে, একসাথে ১৪ বিবি রাখা যায়? কারণ সেখানেতু দ্বীন এসেছে মক্কা-মদীনা থেকে তাই ওখানের লোকেরা যা করে সেটাই শরীয়ত??

তার উপর মক্কা মদীনায় যে শবে বরাত কখনো পালন হত না, তাও কিন্তু ঠিক নয়যেমনঃ

আল্লামা ফাকিহী তদীয় আখবারে মক্কা গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, অতীত থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত মক্কাবাসী নারী পুরুষগণ শাবানের মধ্যবর্তী রাতে মসজিদে গমন করেন অতঃপর নামায আদায় করেন, তাওয়াফ করেন, মসজিদে হারামে কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সারা রাত জেগে থাকেন, এমনকি তারা পূর্ণ কুরআন শরীফ খতম করেনআর যারা একশ রাকাআত নামায আদায় করেন তারা প্রত্যেক রাকাআতে সূরা ফাতিহার সাথে দশবার সূরা এখলাস তিলাওয়াত করেনযমযমের পানি পান করেন, এর দ্বারা গোসল করেন এবং অসুস্থদের জন্য তা জমা করে রাখেনএসব আমলের মাধ্যমে তারা উক্ত রাতের বরকত অন্বেষণ করে থাকেন। (আখবারে মক্কা)

মোটকথা, ইসলামের বিধান, কোন জাতি পালন করল কি করল না, তা দিয়ে নির্ধারিত নয়শরীয়তের দলিল থাকলে তা যে কেউ পালন করতে পারবেশবে বরাতের আমল কোন আবশ্যকীয় আমল নয়এটি নফল ইবাদত, আবশ্যক নয়কেউ যদি নফল বলে এটাকে ছেড়ে দেয়, তাহলে এ জন্য তাদের অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কোন মানে হয় নাকারণ নফল আমল কেউ ছেড়ে দিলে কোন জবাবদিহীতা নেইকরলে সওয়াব পাবে, নতুবা পাবে নাসুতরাং এ নিয়ে বিভ্রান্তি করা উচিত হবে না

শেষকথাঃ

পরবর্তী পর্বগুলোতে কোরআন ও হাদীসের আলোকে শবে বরাত ও এর ফজীলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হবে এবং যথাযুক্ত প্রমাণও উপস্থাপন করা হবে ইনশাল্লাহ

আজ শায়খ আলবানী (রহঃ) এর একটি উক্তি দ্বারা শেষ করব, তিনি তাঁর " সিলসিলাতুল আহাদিস সহীহা " কিতাবের (যে কিতাবটিতে তাঁর নিজের ভাষ্যমতে শুধু সহীহ হাদীসগুলোই স্থান পেয়েছে) ৩য় খণ্ডের ১৩৫ থেকে ১৩৯ পৃষ্ঠা পর্যন্ত শবে বরাতের ফজীলত সম্পর্কিত কিছু হাদীসের বিস্তারিত আলোচনা করে সমাপ্তি টানতে গিয়ে বলেনঃ

"
যা বর্ণিত শায়েখ কাসেমী থেকে তার প্রণিত ইসলাহুল মাসাজিদগ্রন্থের ১০৭ নং পৃষ্ঠায় জারাহ তাদীল ইমামদের থেকে যে, “শাবানের অর্ধ মাসের রাতের কোন ফযীলত সম্পর্কে কোন হাদিস নেই মর্মেসেই বক্তব্যের উপর নির্ভর করা যাবেনাআর যদি কেউ তা মেনে নেয় সে হবে ঝাঁপিয়ে পড়া (ঘারতেড়া) স্বভাবের, আর তার ব্যাক্ষা বিশ্লেষণ ও গবেষণা-উদ্ভাবনের কোন যোগ্যতাই নেই এরকমভাবে যেমন আমি করলাম। "

হে আল্লাহ! তুমি আমাদের সত্যকে সত্য হিসেবে উপস্থাপন করে দাও, যেন তা পালন করতে পারি, আর মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে উপস্থাপিত করে দাও, যেন এ থেকে বিরত থাকতে পারি