মঙ্গলবার, ২৬ জুন, ২০১২

কুরআন-হাদীছের আলোকে শবে বরাত - পর্ব ০৭


بسم الله الرحمن الرحيم
মহাগ্রন্থের ২৫ তম পারা ও ৪৪ নং সূরা দুখানের শুরুতে যে পাঁচটি আয়াত রয়েছে সে আয়াতগুলোই লাইলাতুল বারাআত বিষয়ক আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দুতাই আয়াতগুলো প্রথমে অর্থসহ পেশ করা হচ্ছে

حم وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ ۚ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ أَمْرًا مِّنْ عِندِنَا ۚ إِنَّا كُنَّا مُرْسِلِينَ
হা মীম (এ অক্ষরদুটি হরূফে মুকাত্ত্যিয়াত বা বিকর্তিত বর্ণ যার অর্থ আল্লাহই ভাল জানেন) শপথ প্রকাশ্য কিতাবেরনিশ্চয় আমি কুরআন নাযিল করেছি এক বরকতময় রাতেনিশ্চয়
আমি সতর্ককারীএ রাতে প্রত্যেক জ্ঞানপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে আমিই প্রেরণকারী
(
সূরা দুখানঃ ১-৫ )
আয়াতে উল্লেখিত ليلة مباركة লাইলাতুম মুবারাকাহ (বরকতময় রাত) শব্দের ব্যাখ্যা বা তাফসীরকে কেন্দ্র করেই কুরআনের দৃষ্টিতে লাইলাতুল বারাআত শীর্ষক আলোচনার সূত্রপাত

তাফসীরের দুটি নীতিমালাঃ
পূর্বেই আমি উল্লেখ করেছি যেসব মুফাসসির লাইলাতুম মুবারাকাহর ব্যাখ্যা লাইলাতুল ক্বদর দিয়ে করেছেন, তাফসীরের মূল সূত্র تفسير القرآن بالقرآن (কুরআনের অন্যান্য আয়াত ও হাদীছের কিছু বিবরণ দ্বারা তাফসীর) ধরেই করেছেন
আবার যারা উক্ত শব্দ দ্বারা লাইলাতুল বারাআত তথা ১৫ই শাবানের রাতকে সাব্যস্ত করেছেন তা তাফসীরের দ্বিতীয় মূল সূত্র تفسير القرآن بالا حاديث النبوية (হাদীছের আলোকেই) করেছেন
এখানে এই দুটি নীতিমালা নিয়ে সংক্ষেপে কিছু বলতে চাই

কোরআনের আয়াত দ্বারা কোরআনের তাফসীরঃ
তাফসীরের ব্যাপারে উত্তম ও সঠিক নিয়ম এই যে, কোরআনের তাফসীর কোরআন দ্বারাই করা হবে কারণ কোরআন মাজীদের বর্ণনা এক স্থানে সংক্ষিপ্ত হলেও অন্য স্থানে তার বিস্তারিত বর্ণনা ও ব্যাখ্যাও রয়েছেআবার এরকম অনেক আয়াত রয়েছে যেখানে প্রশ্ন করা হয়েছে, আর অন্য আয়াতে তার উত্তর দেয়া হয়েছে
যেমনঃ সুরা আত তারিকের শুরুতে আল্লাহ বলেনঃ
"
শপথ আকাশের এবং রাত্রিতে আগমনকারীরআপনি কি জানেন, যে রাত্রিতে আসে, সেটা কি ?"
(
সূরা আত তারিকঃ ১-২ )

এখানে আল্লাহপাক প্রশ্ন করেছেন এবং তিনি নিজেই তার পরের আয়াতে তার উত্তর জানিয়ে দিয়েছেনঃ
"
সেটা এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। "
(
সূরা আত তারিকঃ ৩ )
এরকম বহু উদাহরণ ও তাফসীর কোরআনের আয়াত দ্বারা করা যায়অতএব, এরকম ভাবে কোরআন দ্বারা কোরআনের তাফসীর করাই সবচেয়ে উত্তম

হাদীস দ্বারা কোরআনের তাফসীরঃ
অন্যদিকে হাদীস বা সুন্নাহ দ্বারা কোরআনের তাফসীর করাও তাফসীরের অন্যতম প্রধান একটি মূলনীতি যা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না, কারণ সুন্নাহ বা হাদীস হল কোরআন কারীমেরই ব্যাখ্যা ও তাফসীর হযরত ইমাম আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মদ ইদরীস শাফিঈ (রহঃ) বলেছেন, হযরত রসূলুল্লাহ (সঃ) তাঁর সমস্ত নির্দেশ প্রদান করেন কোরআন মাজীদ থেকেই অনুধাবন করার পর
বিভিন্ন ক্ষেত্রে হুজুরে পাক (সঃ) কে কোরআনের কোন আয়াতের বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানানো হয়েছে এবং আদেশ দেয়া হয়েছে তা মানুষকে জানানোর জন্য
যেমনঃ আল্লাহ পাক কোরআনে ইরশাদ করেনঃ
"
আমি এই কোরআন কারীম তোমার উপর এজন্যেই অবতীর্ণ করেছি যে, তুমি তা মানুষের নিকট খোলাখুলিভাবে পৌঁছিয়ে দিবে, যেন তারা চিন্তা গবেষণা করতে পারে। "
(
সূরা নাহলঃ ৪৪ )

অতএব, নবী (সঃ) এর কথা দিয়ে কোরআনের আয়াতের তাফসীর করাও যাবে
যেমনঃ সূরা ইউনুসের ২৬ নং আয়াতে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেনঃ
"
যারা সকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং তারও চেয়ে বেশী। "
এখন এই আয়াতের 'তারও চেয়ে বেশী' বলতে কি বুঝায় সেটা আমরা পাব হাদীস থেকে যেখানে হুজুরে পাক (সঃ) 'তারও চেয়ে বেশী' এর ব্যাখ্যা করেছেন যে, এটি বলতে আল্লাহর দীদার লাভ করা
(
দেখুনঃ সহীহ মুসলিমঃ হাদীস নং - ৩৪৭ )

এরকম অনেক আয়াতেরই ব্যাখ্যা আমরা রসূলের (সঃ) পবিত্র হাদীস থেকে পাই
তাছাড়া কুরআনে কারীমের কোন আয়াতের হুকুম রহিত হয়ে গেছে, কোন আয়াতের হুকুম বহাল আছে, কোন আয়াত কোন প্রেক্ষিতে নাজিল হয়েছে, কোন আয়াত কাদের উদ্দেশ্য করে নাজিল হয়েছেকোন আয়াতাংশের প্রকৃত অর্থ কি? আরবী ব্যাকরণের কোন নীতিতে পড়েছে এই বাক্যটি? - এসব বিস্তারিত জানতেও আমাদের হাদীস শাস্ত্রের সান্নিধ্যে আসতে হবে
আবার অনেক সময় আয়াতের কোন শব্দের ব্যবহার এক এক জায়গায় এক এক রকম হতে পারে
যেমনঃ
এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-اقيموا الصلاة তথা সালাত কায়েম করআরেক আয়াতে বলেছেন-إِنَّ اللَّهَ وَمَلائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ তথা নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা এবং ফেরেস্তারা নবীজীর উপর সালাত পড়েএই আয়াতের শেষাংশে এসেছে-يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا তথা হে মুমিনরা তোমরাও তাঁর উপর সালাত পড় এবং তাঁকে সালাম জানাও{সূরা আহযাব-৫৬}
এই সকল স্থানে লক্ষ্য করুন-সালাতশব্দটির দিকেতিনটি স্থানে সালাত এসেছেএই তিন স্থানের সালাত শব্দের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রথম অংশে সালাত দ্বারা উদ্দেশ্য হল নামাযঅর্থা আল্লাহ তায়ালা আমাদের নির্দেশ দিলেন যে, তোমরা নামায কায়েম কর{সূরা বাকারা-৪৩}
আর দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ও তার ফেরেস্তারা নবীজী সাঃ এর উপর সালাত পড়েন মানে হল-আল্লাহ তায়ালা নবীজী সাঃ এর উপর রহমত পাঠান, আর ফেরেস্তারা নবীজী সাঃ এর উপর সালাত পড়েন, মানে হল নবীজী সাঃ এর জন্য মাগফিরাতের দুআ করেন
আর তৃতীয় আয়াতাংশে সালাতদ্বারা উদ্দেশ্য হল উম্মতরা যেন নবীজী সাঃ এর উপর দরূদ পাঠ করেন। (كتاب الكليات ـ لأبى البقاء الكفومى)
এরকম শব্দের অর্থ প্রয়োগের ক্ষেত্রে অসুবিধা দেখা দিলে হাদীস দ্বারা কোরআনের তাফসীর করা হয় এখন কেউ যদি শুধু কোরআন থেকেই এর তাফসীর করতে যায়, তাহলে দেখা যাবে, সে হয়তো উপরোক্ত আয়াতসমূহের সব জায়গায় সালাতের অর্থ নামাযকে বুঝাবে, না হলে সে নামাযের স্থানে বলবে রহমাতের কথা, রহমতের স্থানে বলবে দরূদের কথা, দরূদের স্থানে বলবে নামাযের কথাএরকম করলে দ্বীন আর দ্বীন থাকবে না, হবে জগাখিচুরী
আবার কোরআনের তাফসীরের জন্য পূর্ণাঙ্গ কোরআন সম্পর্কে যেমন গভীর জ্ঞান দরকার, তেমনি হাদীস শাস্ত্র সম্পর্কেও গভীর জ্ঞান দরকার
যেমন আল্লাহ তায়ালা ছয়টি বিষয়ের অনুসরণ করলে বান্দা সফলকাম হয়ে যাবে মর্মে সূরায়ে মুমিনূন এ ঘোষণা করেন-

قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ (1) الَّذِينَ هُمْ فِي صَلاتِهِمْ خَاشِعُونَ (2) وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ (3) وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ (4) وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ (5) الى اخر- وَالَّذِينَ هُمْ لأمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ (8) وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ (9) أُوْلَئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ (10) الَّذِينَ يَرِثُونَ الْفِرْدَوْسَ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ (11)
১-নিশ্চয় সফলতা অর্জন করেছে মুমিনগণ২-যারা তাদের নামাযে আন্তরিকভাবে বিনীত৩-যারা অহেতুক বিষয় থেকে বিরত থাকে৪-যারা যাকাত সম্পাদনকারী ৫-যারা নিজ লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে৮-এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে৯-এবং যারা নিজেদের নামাযের পরিপূর্ণ রক্ষাবেক্ষণ করে১০ এরাই হল সেই ওয়ারিশ১১-যারা জান্নাতুল ফিরদাউসের উত্তারাধিকার লাভ করবেতারা তাতে সর্বদা থাকবে{সূরা মুমিনুন-১-১১}
এ আয়াতে সমূহে লক্ষ করুন-ছয়টি কাজ করলে আল্লাহ তায়ালা সফলকাম হওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেনসেই সাথে জান্নাতী হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেনঅথচ এ ছয় কাজে রোযার কথা নেইনেই হজ্বের কথাওতাহলে কি আল্লাহর বলা সফলকাম হওয়ার জন্য রোযা রাখার প্রয়োজন নেই? নেই হজ্ব ফরজ হলে হজ্ব আদায়েরও? দুটি গুরত্বপূর্ণ ফরজ ছাড়াই কি ব্যক্তি জান্নাতী হয়ে যেতে পারে? কিভাবে?
আবার অনেক সময় আমরা বাহ্যিক ভাবে কোরআনের যে অর্থ বুঝি, প্রকৃতপক্ষে সে অর্থ নাও হতে পারে

একটি উদাহরণ দেখুনঃ
আব্দুল্লাহ (রঃ) বলেনঃ যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হলঃ " যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম দ্বারা কলুষিত করেনি " (সূরা আল আনাম - ৮২)এটি রসূলুল্লাহ (সঃ) এর সাহাবাদের উপর খুবই কঠিন (ভারী) মনে হলতখন তাঁরা বললেন, আমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে, তারা তাদের ঈমানকে জুলুম দ্বারা কলুষিত করে নি? রসূলুল্লাহ (সঃ) বললেনঃ এ আয়াত দ্বারা এর অর্থ বুঝানো হয়নিতোমরা লুকমানের বাণী যা তাঁর পুত্রকে সম্বোধন করে বলেছিলেন, শিরক করা বড় জুলুম, (সূরা লোকমানঃ ১৩) তা কি শুন নি?
(
সহীহ বুখারী, তাফসীর অধ্যায় )
অর্থা প্রচলিত জুলুম অর্থে এ আয়াত নাজিল হয়নিএখানে লক্ষ্যণীয় যে, সাহাবারা এত জ্ঞানী ও তীক্ষ্ণ মেধাসম্পন্ন হয়েও এই আয়াতের মর্ম বুঝতে পারেন নি, তাদেরকে রসূল (সঃ) বুঝিয়ে দিয়েছেনসেখানে আমরা কিভাবে হাদীসের সাহায্য ছাড়া কোরআনের সব আয়াত বুঝব?
এরকম অসংখ্য স্থান আছে, যার অর্থ উদ্ধার করা কঠিনতাই সেখানে আমাদের কোরআনের পাশাপাশি হাদীস শাস্ত্রেরও সাহায্য নেওয়া অনিবার্য হয়ে পড়ে

এখানে প্রশ্ন দেখা দেয়, কোরআনও আল্লাহর কথা, হাদীসেও রসূলের মাধ্যমে আল্লাহর বাণীই প্রতিফলিত হয়, তাহলে মাঝে মাঝে মতভেদ হয় কেন ? বা একই জিনিসের দুই রকম অর্থ কি হতে পারে?
এর জবাব হল, আল্লাহ ও রসূলের বাণী কুরআন ও হাদীছের মধ্যে বহু জায়গায় শব্দ ও বাক্যের মধ্যে অর্থের দিক দিয়ে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে তথা একাধিক অর্থের অবকাশ রয়েছেসে ক্ষেত্রে নবীজীর সাহাবাগণের মধ্যে এ জাতীয় আয়াত বা হাদীছের তাফসীর ও ব্যাখ্যা নিয়ে মতভেদ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিকআবার একই রকম বাক্য বা অর্থ সাহাবারা অনেক সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে বুঝেছেন, কেউ কেউ এর ব্যাপক অর্থ করেছেন, আবার কেউ কেউ করেন নিতাই মুফাসসিরে কেরাম যে সব মতের স্বপক্ষে দলীল পেয়েছেন, তাদের সবগুলো মতকেই তাদের তাফসীরে তারা উল্লেখ করেছেন এবং সকল মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে যে কোন একটি মত মেনে নেয়াই উম্মতের ঈমানী দায়িত্ব বলে মত প্রকাশ করেছেন

একই বিষয়ের ক্ষেত্রে একাধিক মতও যে গ্রহণযোগ্য তা আমরা হাদীস শরীফ থেকেই জানতে পারি
বুখারী শরীফের একটি বিখ্যাত হাদীস থেকে আমরা জানি, খণ্ডকের যুদ্ধের সময় রসূল (সঃ) সাহাবাদের এই বলে আদেশ দেন যে, তোমাদের মধ্যে কেউ যেন বনী কুরাইযাহ ছাড়া অন্য স্থানে আসরের নামায না পড়েপরবর্তীতে সাহাবাদের মাঝে দুই দল হয়ে একদল আসরের ওয়াক্ত হওয়ায় পথের মধ্যে নামায পড়ে নেন আর একদল সময় পার হওয়া স্বত্তেও বনী কুরাইযাতে গিয়ে নামায আদায় করুন যেহেতু হুজুর (সঃ) বলেছেন তোমাদের মধ্যে কেউ যেন বনী কুরাইযাহ ছাড়া অন্য স্থানে আসরের নামায না পড়েঅতঃপর হুজুরে পাক (সঃ) জানতে পারলে তিনি উভয় দলের সিদ্ধান্তই ঠিক ছিল বলে মত প্রকাশ করেন

এখানে দেখুন, হুজুরে পাক (সঃ) এর হুকুম ছিল একটি, কিন্তু আমল হয়ে গেল দুটি আর হুজুরে পাক (সঃ) তা স্বত্তেও কোনটিকে ভুল বা ভ্রান্ত বলেন নি
এরকম বহু বিষয়েই সাহাবা বা তাফসীরকারকদের মধ্যে মতভেদ দেখা যায়যে কেউ কোন একটি তাফসীর গ্রন্থ ভাল মত পড়লেই বিস্তারিত জানতে পারবেন এ সম্পর্কে
(
উল্লেখ্য, মুয়ায (রঃ) এর ইয়েমেনে যাওয়ার পূর্বের হুজুরে পাক (সঃ) এর সাথে তার কথোপকথনের সেই হাদীসটি থেকে আমরা এও জানতে পারি, যখন কোন আয়াতের তাফসীর কোরআন ও হাদীসের মধ্যে পাওয়া না যাবে, তখন সাহাবীগণের (রঃ) কথার দিকে ফিরে যাওয়া উচিততাঁরা কোরআনের তাফসীর খুব ভাল জানতেন, কারণ যে ইঙ্গিত ও অবস্থা তখন ছিল তার সম্যক জ্ঞান তাঁদের থাকতে পারে যাঁরা সেই সময়ে সশরীরে বিদ্যমান ছিলেনতাছাড়া পূর্ণ বিবেক, বিশুদ্ধ জ্ঞান এবং স আমল তাঁরাই লাভ করেছিলেনবিশেষ করে তাদের মধ্যে যারা শ্রেষ্ঠ ছিলেন, চার খলিফা (রঃ) এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রঃ), হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রঃ)
আবার কোন আয়াতের তাফসীর কোরআন, হাদীস এবং সাহাবীবৃন্দের কথার মধ্যে পাওয়া না গেলে ধর্মীয় ইমামগণের অধিকাংশের অভিমত এই যে, এরূপ স্থলে তাবেঈগণের তাফসীর নেয়া হবে
তবে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র স্বীয় অভিমত দ্বারা তাফসীর করা সম্পূর্ণরূপে হারাম

অনেক বড় বড় মুফাসসিরে কেরাম কোরআনের তাফসীরের ক্ষেত্রে সব সময় সতর্কতা অবলম্বন করতেন, আর আজ আমরা নিজেরাই মুফাসসির হয়ে গিয়ে লাগামহীন ভাবে তাফসীর করে চলেছি। )
(
বিস্তারিত জানতে পড়ুন তাফসীর ইবনে কাসীরের শুরুর অংশগুলো)

তাফসীরের মাঝে বিরোধ মীমাংসা
আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, লাইলাতুম মুবারাকার অর্থ নিয়ে মুফাসসিরে কেরামের মাঝে মতবিরোধ আছেকোরআনের আয়াত দ্বারা তাফসীর করে অধিকাংশ মুফাসসিরে কেরাম এর অর্থ শবে ক্বদর করেছেনঅন্যদিকে শবে বরাত সম্পর্কিত হাদীস দ্বারা তাফসীর করে অনেক মুফাসসিরে কেরাম এর অর্থ শবে বরাত করেছেন তাই এই বিরোধ নিরসন বা সমন্বয় করার জন্য উলামায়ে কেরাম তাফসীর বিরোধের নীতিমালা ( আগের পর্বে নীতিমালাগুলো কি কি তা উল্লেখ করা হয়েছে, কারও না জানা থাকলে দয়া করে দেখে আসুন ) অনুসরণ করে এই বিষয়ে তাদের মতামত এবং সমাধান বের করেছেন এবং পরিশেষে কেউ কেউ এক নীতিমালা অনুসরণ করে শবে ক্বদরের পক্ষে রায় দিয়েছেন আর কেউ কেউ অন্য নীতিমালা অনুসরণ করে শবে বরাতের পক্ষে রায় দিয়েছেনতাই এখানে আমরা সংক্ষেপে নীতিমালার আলোকে মুফাসসিরে কেরাম ও উলামায়ে উম্মতের মন্তব্য তুলে ধরছি

বিরোধ মীমাংসার প্রথম নীতি تطبيق তাতবীক তথা সামঞ্জস্যসাধনঃ
উলামায়ে কেরাম বিভিন্ন ভাবে এর মীমাংসা করেছেনযেমন প্রথম নীতিমালা তথা تطبيق তাতবীক এর আলোকে এ ব্যাপারে কয়েকটি পদ্ধতি নিম্নে পেশ করা হলোঃ

প্রথম মীমাংসা
শবে ক্বদর সম্পর্কে ইমাম আযম আবু হানীফা (রহঃ) এর প্রসিদ্ধ মত হলো, বছরের যে কোন রাতে শবে ক্বদর হতে পারেরাতটি রমজানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়কারণ কুরআন ও হাদীছে এ বিষয়টি উহ্য রয়ে গেছেঅতএব, এ মতটিকে কেন্দ্র করে আলোচ্য আয়াতের মতবিরোধের মীমাংসাকল্পে বলা যেতে পারে যে, কুরআন শরীফ শাবান মাসে ১৫ তারিখের রাত্রিতে অবতীর্ণ হয়েছে বলে ধরা হবেএবং সে বছর একই রাতে শবে বরাত এবং শবে ক্বদরের সংমিশ্রণ ঘটেছে বলে বলা যেতে পারেতাই এ রাতটা শবে ক্বদর হওয়ার সাথে সাথে শবে বরাতও বটে, হেতু উভয়ের মর্যাদার সম্মিলনে রাতটি সম্মানিত হলোএভাবে রাতটিতে কুরআন শরীফ নাযিল হওয়ায় শবে বরাত ও শবে ক্বদর উভয় রাতেই অবতীর্ণ হয়েছে বলে ধর্তব্য হবেএতে উভয় মতের মীমাংসাও হয়ে যাবে অন্য কোন বিরোধ থাকবে নাসুতরাং ليلة مباركة লাইলাতুম মুবারাকাহ এর অর্থ শবে ক্বদর দ্বারা করা যেমন সঠিক তেমনি শবে বরাত দিয়ে করাও সঠিক হয়েছেকোন বিরোধ থাকছে না

দ্বিতীয় মীমাংসা
এভাবেও মীমাংসা হতে পারে যে, সূরা দুখানে যে বলা হয়েছে, বরকতময় রাতে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে, এর অর্থ হচ্ছে কুরআন অবতীর্ণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে মাত্রঅর্থা আল্লাহ তাআলা শবে বরাতের পবিত্র রাতে কুরআন অবতীর্ণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর এ সিদ্ধান্ত মোতাবেক সে বছরের মাহে রমজানের শবে কদরেই কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে, যার বর্ণনা সুরা ক্বদরে দেয়া হয়েছে এবং রাতটি রমজান মাসে অবস্থিতসুতরাং কোন আয়াত ও মতামতের মধ্যে বিরোধ রইল না কেননাঃ সুরায়ে দুখানে

إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ
মুবারক রাতে কুরআন নাযিল করার অর্থ হচ্ছে নাযিল করার সিদ্ধান্ত আর সুরায়ে ক্বদর এবং

القرآن فيه انزل الذى رمضان شهر
এর মধ্যে কোরআন নাযিল হওয়ার অর্থ হচ্ছে, শবে বরাতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাস্তবে তা নাযিল হওয়া

হযরত আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) এক বয়ানে বিষয়টিকে এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ
কুরআনের অবতরণ দুই বার হয়েছেএটা এভাবে হয়েছে যে, এক রাত্রে কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, দ্বিতীয় রাতে সে সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হয়েছে অর্থা শবে বরাতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে, এবার রমযানে যে শবে ক্বদর আসবে সে রাতে কুরআন অবতীর্ণ করা হবে অতঃপর রমযানে শবে ক্বদরে তা অবতরণ করা হয়েছে আর এ কথার অধিক প্রচলন রয়েছে যে, কোন কর্ম সংঘটিত হওয়ার নিকটতম হলে তা সংঘটিত হয়েছে বলে ধর্তব্য হয়সুতরাং সূরায়ে ক্বদরে কুরআন অবতরণ হওয়ার অর্থ হচ্ছে, বাস্তবে অবতীর্ণ হওয়াযা শবে ক্বদরে অবস্থিতআর সূরায়ে দুখানে মোবারক রাতে কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার অর্থ হচ্ছে, অবতীর্ণ হওয়ার সময় অতি সন্নিকটএটাকেই অবতীর্ণ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছেএটি হলো শবে বারাতেউভয়টি রাত যেহেতু পরস্পর অতি নিকটবর্তী তাই অবতরণের নিকটতম সময়কেও অবতরণের অর্থেই ধরে নেয়া হয়েছে

(
উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, ইংরেজী গ্রামার আমরা যারা জানি, তারা অনেকেই এটি জানি যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিকট ভবিষ্যতের কোন কাজকে present tense দ্বারা প্রকাশ করা হয়, future tense ব্যবহার করা হয় নাআর এ দিন পুরোপুরি নাযিল না হয়ে নাযিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এর পক্ষের আরেকটি যুক্তি হল এর পরের আয়াত যেখানে উল্লেখ আছে এ রাতে প্রত্যেক জ্ঞানপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয় অর্থা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়এ বিষয়ে পরবর্তী পর্বে আরও আলোচনা আসছে। )

এর সারমর্ম হলোঃ
হযরত থানবী (রহঃ) এর উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা বুঝা গেল, উভয় মতের বিরোধের সমাধানকল্পে এভাবে বলা উচিত যে, সুরায়ে দুখানে মুবারক রাতে কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার অর্থ হচ্ছে শবে বারাতে অবতীর্ণ হওয়ার সিদ্ধান্তআর সুরায়ে ক্বদরে লাইলাতুল ক্বদরে অবতীর্ণ হওয়ার অর্থ হচ্ছে, সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নউভয়টির মধ্যকার সময় স্বল্প তাই সিদ্ধান্তকেই অবতীর্ণ বলে ধরে নেয়া হয়েছেসুতরাং উভয় মতামতের মাঝে কোন বিরোধ বিদ্যমান থাকলো না তাই সূরা দুখানের ليلة مباركة থেকে যে সব তাফসীরকারক ليلة النصف من شعبان তথা মধ্য শাবানের রাত তথা শবেবরাত উদ্দেশ্য স্থির করেছেন এটি একটি গ্রহণযোগ্য মতামত; এটাকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই

হযরত থানবী (রহঃ) এর উক্ত মতটি থেকে সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে একই সুরার আয়াত

فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ
এর তাফসীর দ্বারা হযরত (রহঃ) তার স্বীয় গ্রন্থ ( تفسير بيان القرآن ) বায়ানুল কুরআনে বলেন যে, “ প্রতিটি প্রজ্ঞাসম্পন্ন বিষয়ের ফয়সালাও এ মোবারক রাতে হয়ে থাকে ” – এর ব্যাখ্যা হলো তাঁর ভাষায়ঃ
শেষ পর্যন্ত এ কথা বলতে হবে যে, শবেবরাত ও শবে ক্বদর উভয় রাত্রে প্রজ্ঞাসম্পন্ন বিষয়ের সিদ্ধান্ত হয়এটা অসম্ভবের কিছুই নয়বরং তা এভাবে হয় যে বিভিন্ন ঘটনা, বিষয়াবলী লিখিতভাবে সিদ্ধান্ত হয় শবে বরাতে এবং তা সংশ্লিষ্টদের নিকট হস্তান্তর হয়ে থাকে শবে ক্বদরেযেমন রূহুল মাআনীতে হযরত ইবনে আব্বাস (রঃ) থেকে সূত্রবিহীনভাবে হুবহু এভাবে বর্ণিত হয়েছে (উল্লেখ্য) যে, এটা একটা সম্ভাবনাময় তাফসীর (একমাত্র সঠিক তাফসীর নয়) তাই এর জন্য অকাট্য সূত্র দ্বারা প্রমাণিত হওয়া নিষ্প্রয়োজন

(
দেখুন বয়ানুল কুরআনঃ খ , পৃ ৮৬ )

উল্লেখ্য এখানে ইবনে আব্বাসের যে বর্ণনার দিকে হযরত (রহঃ) ইঙ্গিত করেছেন তা তাফসীরে মাযহারীতে এভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে
আল্লাহ তাআলা সকল প্রজ্ঞাসম্পন্ন বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন শবে বরাতে এবং তা সংশ্লিষ্টদের নিকট সোপর্দ করেন ক্বদরের রাতে

(
দেখুন তাফসীরে মাযহারীঃ খ , পৃ ৩৬৮ )

তৃতীয় মীমাংসা
কেউ কেউ এভাবে মতদ্বয়ের সমাধান করেছেন যে, শবে বরাতে কুরআন শরীফ লওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আকাশে অবতীর্ণ হয়েছেএর বর্ণনা সূরা দুখানে দেয়া হয়েছেঅতঃপর সেখান থেকে জিব্রাঈল (আঃ) এর মাধ্যমে তা ক্বদরের রাতে রসূল (সঃ) এর উপর অবতীর্ণ হওয়া আরম্ভ হয়ে ২৩ বছরে তার সমাপ্তি ঘটেছেযার বর্ণনা সূরা কদরে বিদ্যমান আছে এবং সে ক্বদরের রাতটি রমজান মাসে অবস্থিতসুতরাং কুরআন মাহে রমজানের শবে ক্বদরে রসূল (সঃ) এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে দুনিয়ার আসমান হতেআর শবে বরাতে অবতীর্ণ হয়েছে লওহে মাহফুয থেকেএ অর্থেই সূরা দুখানে মোবারক রাতে কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার কথা বলা হয়েছে

এ মীমাংসার পক্ষে বিবরণ পাওয়া যায় আল্লামা আবুস সাউদ এর সুপ্রসিদ্ধ তাফসীর গ্রন্থ تفسير ابى السعود তাফসীরে আবি সাউদ এর মধ্যে তিনি বলেনঃ
মোবারক রাত থেকে উদ্দেশ্য হলো, শবে ক্বদরকেউ কেউ বলেছেনঃ এর উদ্দেশ্য হল, শবে বরাতএ রাতে কুরআনের অবতরণ আরম্ভ হয় অর্থা এ রাত্রে পরিপূর্ণ কুরআন দুনিয়ার আসমানে লৌহে মাহফুজ থেকে একসঙ্গে অবতীর্ণ হয় এবং হযরত জিবরাইল (আঃ) তা তাখতির মধ্যে লিপিবদ্ধ করেন

প্রতিটি প্রজ্ঞাসম্পন্ন বিষয়ের ফায়সালা হয় ” (এ ব্যাপারে বলেন) কেউ কেউ বলেছেনঃ
শবেবরাতে লওহে মাহফুজ থেকে লিখিতভাবে অবতরণ আরম্ভ হয় এবং শবে ক্বদরে গিয়ে তার সমাপ্তি ঘটেরিযিকের বিষয়ে লিখিত তাখতী মিকাঈল (আঃ) কে দেয়া হয় যুদ্ধ-বিবাদ বিষয়-সম্বলিত তাখতী জিবরাঈল (আঃ) কে অনুরূপ ভূমিকম্প, বিজলীর গর্জন, ভূমি ধসে পড়ার বিষয়গুলোও তাকে দেয়া হয় এবং সকল আমলের বিষয় দুনিয়ার আসমানের বিশিষ্ট ফেরেশতা ইসমাইলকে প্রদান করা হয়বিপদ ও মুসিবতের বিষয়গুলো আযরাঈল (আঃ) কে প্রদান করা হয়
(
দেখুন তাফসীরে আবি সাউদঃ খ , পৃ ৪৭ )

উক্ত মতের স্বপক্ষে তাফসীরে জালালাইনে বিবরণ পাওয়া যায় এভাবেঃ
মোবারক রাত অর্থ হচ্ছে, শবে ক্বদর অথবা মধ্য-শাবানের রাত যে রাতে কুরআন শরীফ সপ্তম আসমান থেকে দুনিয়ার আসমানে অবতীর্ণ হয়
(
দেখুন জালালাইন শরীফঃ পৃ ৪০৮ )

ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী (রহঃ) এ ব্যাপারে সবিস্তারে আলোচনা করার পর মাসআলার শেষে বলেছেনঃ
বলা হয়েছে যে, শবে বরাতে লওহে মাহফুয হতে কুরআন অবতরণের কাজ শুরু হয় এবং শবে ক্বদরে এসে তার সমাপ্তি ঘটে
(
দেখুন তাফসীরে কবীরঃ খ ১৪, পৃ ৩৪১ )

শেষ কথাঃ
এভাবে তাফসীর বিরোধের প্রথম নীতিমালার আলোকে লাইলাতুম মুবারাকার ব্যাখ্যায় অনেক মুফাসসিরে কেরাম ও উলামায়ে উম্মত শবে বরাতকে প্রাধান্য দিয়েছেনআর তাদের এই ব্যাখ্যার পক্ষে সবচেয়ে বড় যুক্তি হল " এ রাতে প্রত্যেক জ্ঞানপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয় " আর শবে বরাত ও জ্ঞানপূর্ণ বিষয়ের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অনেক হাদীস পাওয়া যায়আবার অন্যদিকে অন্যান্য নীতিমালার আলোকে অনেক মুফাসসিরে কেরাম লাইলাতুম মুবারাকার অর্থ শবে ক্বদরকে দিয়ে করেছেন যার আলোচনা পরবর্তী পর্বসমূহে আলোচিত হবে ইনশাল্লাহ
আজ কোরআনে কারীমের একটি আয়াত পেশ করে শেষ করবঃ

وَلَوْرَدُّوْهُ اِلَى الرَّسُوْلِ وَاِلى اُوْلِى الْاَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِيْنَ يَسْتَنْبِطُوْنَهُ مِنْهُمْ
এবং যদি এ ক্ষেত্রে তারা রসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) ও আদেশদানকারী যোগ্য ব্যক্তিদের প্রতি রুজু করতো তাহলে নিশ্চয় তাদের মাঝে যারা সমস্যার সমাধান বের করার যোগ্যতা রাখেন, তাঁরা এর গুঢ়তত্ত্ব উপলব্ধি করতে পারতেন