মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১২

রাসুলের প্রতি যদি থাকে ভালোবাসাঃ মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধই একমাত্র আশা।


---আ স ম আহসান উল্লাহ আব্দুল্লাহ।
মানব জাতীর সার্বিক কল্যাণের জন্য, মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদের কে অনেক দয়া করে, সত্য আদর্শের মূর্তপ্রতীক হিসাবে রাসুল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামদেরকে প্রেরন করেছেন। এইক্ষেত্রে, সর্বপ্রথম-সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ট রাসুল, আমাদের প্রান-প্রিয় রাসুল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে, পৃথিবীর সকল রাসুলদের সর্দার ও কেয়ামতের দিন কঠিন মুসিবতের সময়ের একমাত্র শাফায়াতকারী ঘোষনা দিয়ে আমাদের মাঝে প্রেরন করেন, যাহা আমাদের জন্য এক বিশাল নেয়ামত।
কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষী ও নবীদ্রোহীরা, তা মেনে নিতে পারিনাই বিধায় বর্তমান বিশ্বে মুসলমানদের বিরুদ্ধে মানবতার শত্রুরা সুগভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই ঐ সকল নরপশুরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাংবাদিক, লেখক, কার্টুনিস্ট ও চলচিত্র পরিচালক দিয়ে, বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমানদের প্রানপ্রিয় নবীকে নির্মম অপমান করে(নাউজুবিল্লাহ),  ধর্মীয় আনুভুতিতে চরম আঘাত করেছে।
এরাই সালমান রুশদীকে দিয়ে স্যাটানিক ভার্সেস লিখিয়ে আমাদের নবীর সুমহান মর্যাদার অপমান
করতে চেস্টা করিয়েছে। ২০০৫ সালে ডেনমার্কের বহুল প্রচারিত জাইলেন্ড পোস্টেনে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ এবং ২০০৬ জানুয়ারিতে নরওয়ের একটি ম্যাগাজিনে, তারপর ফ্রান্স, জার্মান, ইতালী, স্পেন সহ ইউরোপের কিছু দেশে তা পুনঃপ্রচার এবং সম্প্রতি যুক্তরাষ্টে চলচিত্র। এভাবে একের পর এক অসভ্য ঘটনার প্রেক্ষিতে এটাই প্রমান হলো ইউরোপীয় দেশগূলো মুসলিম
বিদ্বেষী (আল্লাহ তাদের বিচার করুন)। এদের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হয়ে তাদের ইসলাম বিরুধী সকল অন্নায়ের প্রতিবাদ করা মুসলমানদের ইমানী দায়িত্ব।
মুসলমানদের এই ঈমানী চেতনায় ও দায়িত্ববোধের প্রতিফলনে, বিশ্বের সকল মুসলিম দেশ থেকে জালিমদের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, তা সত্যই প্রশংসনীয়। এই প্রতিবাদের অংশ হিসাবে ৯০% মুসলমানদের বাংলাদেশের বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের প্রতিবাদী কর্মসুচী দেখে যেমনিভাবে মনে অনেক শান্তি পাই, ঠিক তেমনিভাবে মনে অনেক প্রশ্নও জাগে- রাসুল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  এর পক্ষে বিভিন্ন সংগঠন যখন যার যার অবস্থান থেকে অন্নায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, তেমনিভাবে রাসুল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  এর আদর্শ রক্ষার জন্য ও প্রতিষ্ঠার জন্য যার যার অবস্থান থেকে কেনো ঐক্যবদ্ধ হতে পারবোনা?
আমরা মুসলমানেরা যদি ইসলামের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি তবে সকল অন্নায় ধূলিসাৎ হয়ে যাবে এবং অন্নায়কারীরা নত স্বীকার করতে বাধ্য হবে, ফলশ্রুতিতে আমাদের রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম এর আদর্শ বাস্থবায়ন সুনিচ্ছিত। অথচ আমাদের মাঝে আজ অনেক বিভক্তি, মতবেদে বিভক্ত আজ আমাদের মুসলিম সমাজ। ঈমান্দারেরা আজ দল-উপদলের বেড়াজালে আবদ্ধ। সঠিক পথের সন্ধ্যানে দিশেহারা সাধারন মুসলমান।
তাই আজ আমাদেরকে অমুসলিমরা তিরস্কার করার দুঃসাহস দেখায়। প্রিয় রাসুল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  এর প্রতি সত্যিকারের ভালোবাসা থাকলে গোটা মুসলিম সমাজ ঘুরে দাঁড়াতে হবে। সকল মতবেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে জালেম ও জুলুমের বিরুদ্ধে, তবেই আমাদের বিজয় সুনিচ্ছিত।
আমাদের কি মনে পড়েনা সেই বদরের ময়দানের কথা ? ৩০০০ কাফের-মুশরিকদের বিরুদ্ধে মাত্র ৩১৩ জন ঈমানদার মুসলিম সৈনিক আল্লাহর মেহেরবানীতে বিজয় অর্জন করেছিলেন। আমরা কেনো পিছিয়ে থাকবো ? আমাদের সাথেতো মহান রাব্বুল আলামিন ও তাঁর পবিত্র কালামে পাক মহাগ্রন্থ আল-কোরান এবং আমাদের রাসুল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  এর ভালোবাসা, তাঁর আদর্শ, তাঁর সকল পবিত্র হাদিস শরিফ নীর্ধারন করা আছে।
ঈমানী দায়িত্বে ও আমাদের রাসুল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  এর ভালবাসায়- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  এর আদর্শের পুর্নাংজ্ঞ বাস্তবায়নের জন্য, সকল ইমানদার মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়াটা আজ সময়ের দাবী। ইসলাম বিদ্ধেষী ও নবীদ্রোহীদের সাথে গোপন সম্পর্কের মাধ্যমে, মুসলমানদের ঈমান-আকিদা নিয়ে যারা তামাশা করে বেড়াচ্ছে, সেই সকল মুনাফিকদেরকে খুজে বের করে, মুসলিম সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে বাহিরে নিক্ষেপ করা অতিব জরুরি।
প্রবাদে আছে-অন্তরে কূভাব রেখে মুখে আত্মীয়তা, এর ছেড়ে অধিক ভালো প্রকাশ্য শত্রুতা।ইউরোপীয় বর্বর বিজাতীয়রা আজ আমাদের প্রকাশ্য শত্রু তাই আমরা তাদের যেকোন অন্নায় কে প্রতিবাদ করতে পারি এবং তাদের যেকনো অনিয়মকে প্রত্যাখ্যান করতে পারি, কিন্তু সেই কুলাংকার পশ্চিমাদের দোসর হয়ে যারা আজ মুসলমানদের ঐক্যের মাঝে ফাটল ধরাচ্ছে, আলেম সমাজকে বিভ্রান্ত করে অনৈক্যের দিকে ধাবিত করিতেছে, অনতিবিলম্বে তাদেরকে উচিত জবাব দেওয়ার এখনি সময়।
 সার্ট গায়ে দিয়ে নামাজ পড়বে নাকি পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে নামাজ পড়বে, এই বিতর্ক না করে আগে নামাজ কায়েম করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেস্টা করতে হবে। সিরাতুন্নবী আর মীলাদুন্নবী নিয়ে বিবাদ না করে, প্রিয় নবীর আদর্শের জন্য সবাইকে এক একমঞ্চে আসতে হবে।
আমার বিশ্বাস বিশাল মুসলিম জনগোষ্টির দেশ আমাদের এই বাংলাদেশের আলেম সমাজ যদি সকল ব্যক্তিগত মত-পার্থক্য ভুলে গিয়ে, আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভালোবাসায়, অন্ততপক্ষে কোরান-হাদিসের মৌলিক বিষয় গুলোতে ঐক্য হতে পারে, তবে বাংলাদেশের সাধারন মুসলমান ঈমান হারা হবেনা, ফলে আমাদের উপর আল্লাহর রহমত আবধারিত থাকবে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শ বাস্তবায়িত হবে। এতে করে বাংলাদেশের জমিনে কোন ইসলাম দ্রোহীদের  যেকোন হটকারীতার বিন্দুমাত্র সুযোগ থাকবেনা।
 তাই মিটিং-মিসিল ও রাজনৈতিক কর্মসুচীর সাথে সাথে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভালোবাসাকে অন্তরে ধারন করে, সকল ইমানদারদেরকে ঐক্যবদ্ধ হওয়াটাই এখন ঈমানের একমাত্র দাবী ও আমাদের মুসলমানদের একমাত্র মনের আশা।