বৃহস্পতিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১২

কুরআন মজীদ ও সহীহ হাদীসের আলোকে হজ্ব ও উমরার গুরুত্ব ও ফযীলত

ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহের পঞ্চমটি হল হজ্বে বায়তুল্লাহ। ঈমাননামাযযাকাত ওরোযার পরই হজ্বের অবস্থান। হজ্ব মূলত কায়িক  আর্থিক উভয়ের সমন্বিত একটিইবাদত। তাই উভয় দিক থেকে সামর্থ্যবান মুসলিমের উপর হজ্ব পালন করা ফরয।অর্থাৎ হজ্ব আদায়ে সক্ষম এমন শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয়খরচাপাতি  আসবাবপত্রের অতিরিক্ত হজ্বে যাওয়া-আসার ব্যয় এবং হজ্ব আদায়কালীনসাংসারিক ব্যয় নির্বাহে সক্ষম এমন সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর হজ্ব আদায় করা ফরয।হজ্ব প্রত্যেক মুসলমানের উপর সারা জীবনে একবারই ফরয হয়। একবার ফরয হজ্বআদায়ের পর পরবর্তী হজ্বগুলো নফল হিসেবে গণ্য হবে।  সম্পর্কে হাদীস শরীফেবর্ণিত হয়েছেআবু হুরায়রা রাবর্ণনা করেনএকদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন-
হে মানবসকলআল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর হজ্ব ফরয করেছেন। সুতরাং তোমরাহজ্ব করো। এক ব্যক্তি বললইয়া রাসূলাল্লাহপ্রতি বছর কি হজ্ব করতে হবেতিনি চুপরইলেন এবং লোকটি এভাবে তিনবার জিজ্ঞেস করল। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনআমি যদি হ্যাঁ বলতামতাহলে তা (প্রতি বছর হজ্ব করা)ফরয হয়ে যেতোকিন্তু তোমাদের পক্ষে তা করা সম্ভব হতো না।-সহীহ মুসলিমহাদীস :১৩৩৭ (৪১২); মুসনাদে আহমদহাদীস : ১০৬০৭সহীহ ইবনে হিববানহাদীস :৩৭০৪সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৫০৮সুনানে নাসায়ী /১১০শরহেমুশকিলুল আছারহাদীস : ১৪৭২সুনানে দারাকুতনী /২৮১
ইবনে আববাস রাহতে বর্ণিত অনুরূপ হাদীসে আরো বলা হয়েছেহজ্ব (ফরযহলএকবারএরপরে যে অতিরিক্ত আদায় করবে তা নফল হিসেবে গণ্য।-মুসনাদে আহমদ,হাদীস : ২৩০৪সুনানে দারিমীহাদীস : ১৭৮৮সুনানে নাসায়ী /১১সুনানে আবুদাউদহাদীস : ১৭২১সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস : ২৮৮৬মুসতাদরাকে হাকিম,হাদীস : ৩২০৯
হজ্ব যেহেতু একবারই ফরয তাই যার উপর হজ্ব ফরয হয়েছে সে যদি মৃত্যুর আগে যেকোনো বছর হজ্ব আদায় করেতবে তার ফরয আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু হজ্ব বিধানেরমৌলিক তাৎপর্যতার যথার্থ দাবি  আসল হুকুম হচ্ছে হজ্ব ফরয হওয়ার সাথে সাথেআদায় করা। বিনা ওজরে বিলম্ব না করা। কারণ বিনা ওজরে বিলম্ব করাও গুনাহ। আল্লাহতাআলা  তার রাসূল ফরয হজ্ব আদায়ের প্রতি এমনভাবে 

গুরুত্বারোপ করেছেন যে,কেউ যদি এই হজ্বকে অস্বীকার করে বা  বিষয়ে কোনো ধরনের অবহেলা প্রদর্শন করেতবে সে আল্লাহর জিম্মা থেকে মুক্ত  হতভাগ্যরূপে বিবেচিত হবে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
 মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বায়তুল্লাহপৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপরআল্লাহর উদ্দেশ্যে  গৃহের হজ্ব করা ফরয। আর কেউ যদি অস্বীকার করে তাহলেতোমাদের জেনে রাখা উচিত যেআল্লাহ তাআলা সৃষ্টিজগতের প্রতি মুখাপেক্ষী নন।-সূরাআলে ইমরান () : ৯৭
তাছাড়া যে কোনো ধরনের বিপদ-আপদঅসুখ-বিসুখের সম্মুখীন হওয়া বা মৃত্যুর ডাকএসে যাওয়া তো অস্বাভাবিক নয়। তাই হজ্ব ফরয হওয়ার পর বিলম্ব করলে পরে সামর্থ্যহারিয়ে ফেললে বা মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তাআলার নিকট অপরাধী হিসেবেই তাকেহাজির হতে হবে। এজন্যই হাদীস শরীফে হজ্ব ফরয হওয়ামাত্র আদায় করার তাগিদ হুকুম দেওয়া হয়েছে।
ইবনে আববাস রাবর্ণনা করেনরাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেন-
 যে ব্যক্তি হজ্ব করার ইচ্ছে করেসে যেন তাড়াতাড়ি তা আদায় করে নেয়। কারণ যেকোনো সময় সে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে বা বাহনের ব্যবস্থাও না থাকতে পারে অথবাঅন্য কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।-মুসনাদে আহমদহাদীস : ১৮৩৩সুনানেইবনে মাজাহহাদীস : ২৮৮৩সুনানে আবু দাউদহাদীস : ১৭৩২সুনানে দারিমী,হাদীস : ১৭৮৪মুসতাদরাকে হাকেমহাদীস : ১৬৮৭তবারানীহাদীস : ৭৩৮
অন্য বর্ণনায় ইরশাদ হয়েছেইবনে আববাস রাবলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
ফরয হজ্ব আদায়ে তোমরা বিলম্ব করো না। কারণ তোমাদের কারো জানা নেইতোমাদের পরবর্তী জীবনে কী ঘটবে।-মুসনাদে আহমদহাদীস : ২৮৬৭সুনানে কুবরাবায়হাকী /৩৪০

উপরন্তু একটি হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তাআলা যে স্বচ্ছল সামর্থ্যবান ব্যক্তি সত্ত্বর হজ্বআদায় করে না তাকে হতভাগা  বঞ্চিত আখ্যায়িত করেছেন।
আবু সাঈদ খুদরী রাহতে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেন-
আল্লাহ তাআলা বলেনআমি আমার বান্দার শরীরকে সুস্থ রাখলামতার রিযিক আয়-উপার্জনে প্রশস্ততা দান করলাম। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও যদি সে আমারগৃহের হজ্বের উদ্দেশ্যে আগমন না করে তবে সে হতভাগ্যবঞ্চিত।-সহীহ ইবনে হিববান,হাদীস : ৩৬৯৫মুসনাদে আবু ইয়ালাহাদীস : ১০৩১তবারানীহাদীস : ৪৯০সুনানেকুবরা বায়হাকী /২৬২মাজমাউয যাওয়াইদহাদীস : ৫২৫৯
শুধু তাই নয়একসময় বায়তুল্লাহ উঠিয়ে নেয়া হলে মানুষ হজ্ব করতে পারবে না এইআশঙ্কার কারণেও আল্লাহর রাসূল উম্মতকে তাড়াতাড়ি হজ্ব করার হুকুম করেছেন।ইবনে উমর রাহতে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
তোমরা হজ্ব  উমরার মাধ্যমে এই (বায়তুল্লাহগৃহের উপকার গ্রহণ কর। কেননা তাইতিপূর্বে দুবার ধ্বংস হয়েছে। তৃতীয়বারের পর উঠিয়ে নেওয়া হবে।-সহীহ ইবনেখুযাইমাহাদীস : ২৫০৬সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ৬৭১৮মুসনাদে বাযযার,হাদীস : ১০৭২মুসতাদরাকে হাকিমহাদীস : ১৬৫২

হজ্ব করার শক্তি-সামর্থ্য  অর্থ-বিত্ত থাকার পরও যে ব্যক্তি হজ্ব করে না তার সম্পর্কেহাদীস শরীফে কঠোর হুমকি প্রদান করা হয়েছে। ওমর ইবনুল খাত্তাব রাবলেন-
যে ব্যক্তি হজ্ব করার সামর্থ্য রাখেতবুও হজ্ব করে না সে ইহুদী হয়ে মৃত্যুবরণ করল কিখৃস্টান হয়ে তার কোনো পরোয়া আল্লাহর নেই।-তাফসীরে ইবনে কাসীর /৫৭৮
তিনি আরো বলেনআমার ইচ্ছে হয় কিছু লোককে বিভিন্ন শহরাঞ্চল  লোকালয়েপাঠিয়ে দিইতারা সেখানে দেখবেকারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্ব করছে না। তারাতাদের উপর কর আরোপ করবে। তারা মুসলমান নয়তারা মুসলমান নয়।-প্রাগুক্ত

যারা হজ্ব-উমরা না করে সন্ন্যাসী হওয়ার চেষ্টা করে ইসলাম তা কখনো অনুমোদন করেনা। ইবনে আববাস রাহতে বর্ণিতনবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেন-
ইসলামে বৈরাগ্য নেই। অন্য বর্ণনায় রয়েছেহজ্বের ক্ষেত্রে কোনো বৈরাগ্যনেই।-মুসনাদে আহমদহাদীস : ৩১১৩৩১১৪সুনানে আবু দাউদহাদীস : ১৭২৯;মুসতাদরাকে হাকেমহাদীস : ১৬৮৬তবারানীহাদীস : ১১৫৯৫শরহু মুশকিলুলআছারহাদীস : ১২৮২
ইকরামা রাহ.কে জিজ্ঞাসা করা হলসারুরা কীতিনি বলেনযে ব্যক্তি হজ্ব-উমরাহকিছুই করে না অথবা যে ব্যক্তি কুরবানী করে না।-শরহু মুশকিলুল আছার /২১৫-১৬
সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা রাহবলেনজাহেলী যুগে যখন কোনো ব্যক্তি হজ্ব করত নাতখন তারা বলতসে সারুরা (বৈরাগী) তখন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেনইসলামে বৈরাগ্য নেই।-প্রাগুক্ত
যারা হজ্বের সফরের সৌভাগ্য লাভ করেন তারা যেন আল্লাহর মেহমান। তাই প্রত্যেকেরউচিত সর্বদা আল্লাহর আনুগত্য  তার ইশক-মুহববতের অনুভূতি নিয়ে সেখানেঅবস্থান করা। বায়তুল্লাহ  আল্লাহর অন্যান্য শেআর  নিদর্শনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনকরা। সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। দ্বন্দ-কলহঝগড়া-বিবাদ এবংঅন্যায়-অশ্লীলতা থেকে সর্বাত্মকভাবে দূরে থাকা। কুরআন-হাদীসে  সম্পর্কে বিশেষহুকুম নাযিল হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- 
হজ্বের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে (ইহরাম বেঁধে)নিজের উপর হজ্ব অবধারিত করে নেয় সে হজ্বের সময় কোনো অশ্লীল কথা বলবে না,কোনো গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না। তোমরা যা কিছু সৎকর্ম করবে আল্লাহতা জানেন।-সূরা বাকারা () : ১৯৭
উক্ত আয়াতে তিনটি বিষয় থেকে বিশেষভাবে নিষেধ করা হয়েছে। একইহরাম অবস্থায়অশ্লীল কথা বলা। এমনকি স্ত্রীর সাথে যৌন উত্তেজনামূলক কথা বলাও নিষিদ্ধ। দুই.কোনো ধরনের গুনাহয় লিপ্ত হওয়া। ইহরাম অবস্থার বিশেষ গুনাহ যেমন শরীরেরকোনো স্থানের চুলপশম বা নখ কাটাআতর বা সুগন্ধি লাগানোপশু শিকার করা,শরীরে উকুন মারা থেকে যেরূপ বিরত থাকবে তেমনি সাধারণ অবস্থার গুনাহ যেমনঅন্যকে কষ্ট দেওয়াকু-দৃষ্টি  গীবত শেকায়েত থেকেও বিরত থাকবে। তিন.ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হওয়া।
 ধরনের পাপ-পঙ্কিলতা  ঝগড়া-বিবাদমুক্ত হজ্বকেই হাদীস শরীফে হজ্বে মাবরূর বামকবুল হজ্ব বলা হয়েছে এবং এর বিশেষ বিশেষ ফযীলত  মর্যাদা উল্লেখিত হয়েছে।এখানে কিছু ফযীলত বর্ণনা করা হল।
হজ্ব পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মুছে দেয়
আবু হুরায়রা রাবর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেন-
যে ব্যক্তি হজ্ব করে আর তাতে কোনোরূপ অশ্লীল  অন্যায় আচরণ করে না তারপূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।-সুনানে তিরমিযীহাদীস : ৮১১
অন্য বর্ণনায় রয়েছে
আবু হুরায়রা রাবলেনআমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতেশুনেছিযে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্ব করল এবং অশ্লীল কথাবার্তা  গুনাহ থেকেবিরত থাকল সে  দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে হজ্ব থেকে ফিরে আসবে যেদিন মায়েরগর্ভ থেকে ভূমিষ্ট হয়েছিল।-সহীহ বুখারীহাদীস : ১৫২১সহীহ মুসলিমহাদীস :১৩৫০মুসনাদে আহমদহাদীস : ৭৩৮১সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস : ২৮৮১;সুনানে নাসায়ী /১১৪সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ৩৬৯৪সহীহ ইবনে খুযাইমা,হাদীস : ২৫১৪
অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে-
আতা ইবনে ইয়াসার রাহহতে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেনযে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর হজ্ব করেহজ্বের বিধানগুলো যথাযথভাবে আদায় করে,মুসলমানরা তার মুখ  হাত থেকে নিরাপদ থাকেতার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করেদেওয়া হয়।-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাকহাদীস : ৮৮১৭তাফসীরে ইবনে কাসীর/৩৫৮
আমর ইবনুল আস রাবর্ণনা করেন, (দীর্ঘ এক হাদীসেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বললেন-
হে আমরতুমি কি জান না যেইসলাম (গ্রহণপূর্বেকার যাবতীয় পাপকে মুছে ফেলে।হিজরত তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহকে মিটিয়ে দেয় এবং হজ্ব অতীতের পাপসমূহ মুছেদেয়।-সহীহ মুসলিমহাদীস : ১২১সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৫১৫মুসনাদেআহমদহাদীস : ১৭৭৭৭শরহু মুশকিলিল আছারহাদীস : ৫০৭

হজ্বে মাবরূরের প্রতিদান হল জান্নাত
আবু হুরায়রা রাহতে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেন-
এক উমরা আরেক উমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহর ক্ষতিপূরণ হয়ে যায়। আরহজ্বে মাবরূরের প্রতিদান তো জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।-সহীহ বুখারীহাদীস :১৭৭৩সহীহ মুসলিমহাদীস : ১৩৪৯মুসনাদে আহমদহাদীস : ৭৩৫৪সহীহ ইবনেখুযাইমাহাদীস : ২৫১৩সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ৩৬৯৫সুনানে তিরমিযী,হাদীস : ৯৩৩সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস : ২৮৮৮মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা,হাদীস : ১২৭৮২
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাহতে বর্ণিততিনি বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
তোমরা হজ্ব  উমরা পরপর একত্রে পালন কর। কেননা  দুটি (হজ্ব  উমরাহদারিদ্র গুনাহসমূহ এমনভাবে দূর করে দেয় যেমন কামারের হাপর লোহা  সোনা-রূপারময়লা দূর করে দেয়। আর হজ্বে মাবরূরের বিনিময় জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।-সুনানেতিরমিযীহাদীস : ৮১০মুসনাদে আহমদহাদীস : ৩৬৬৯মুসান্নাফ ইবনে আবীশাইবাহাদীস : ১২৭৮০সুনানে কুবরানাসায়ীহাদীস : ৩৬১০সহীহ ইবনে খুযাইমা,হাদীস : ২৫১২সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ৩৬৯৩মুসনাদে আবু ইয়ালাহাদীস :৪৯৭৬তবারানীহাদীস : ১০৪৬০

জাবির রাহতে বর্ণিতনবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
হজ্বে মাবরূরের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়। জিজ্ঞাসা করা হলহজ্বেরসদাচার কীতিনি বললেনখানা খাওয়ানো এবং উত্তম কথা বলা (অর্থাৎ অনর্থক অশ্লীল কথাবার্তা পরিত্যাগ করা)
অন্য বর্ণনায় রয়েছেখানা খাওয়ানো  বেশি বেশি সালাম করা (সালামের বিস্তারঘটানো)-সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ৩০৭২শুআবুল ঈমানবায়হাকীহাদীস :৪১১৯মুসনাদে আহমদহাদীস : ১৪৪৮২তবারানী আওসাত /১১৩মুসনাদে আবুদাউদত্বয়ালিসীহাদীস : ১৭১৮মুসতাদরাকে হাকেমহাদীস : ১৮১২মুসান্নাফআবদুর রাযযাকহাদীস : ৮৮১৭

সর্বোত্তম আমল হজ্বে মাবরূর
হযরত আবু হুরায়রা রাহতে বর্ণিততিনি বলেন-
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলসর্বোত্তম আমলকোনটিতিনি বললেনআল্লাহ  তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞাসা করা হল,তারপর কোনটিতিনি বললেনআল্লাহর পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞাসা করা হলতারপরকোনটিতিনি বললেনহজ্বে মাবরূর বা কবুল হজ্ব।-সহীহ বুখারীহাদীস : ২৬সহীহমুসলিমহাদীস : ৮৩মুসনাদে আহমদহাদীস : ৭৫৯০সুনানে তিরমিযীহাদীস :১৬৫৮সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ১৫৩মুসান্নাফে আবদুর রাযযাকহাদীস :২০২৯৬শুআবুল ঈমানবায়হাকীহাদীস : ৪২১১
মায়িয রাহতে বর্ণিততিনি বলেন-
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলকোন আমলসর্বোত্তামতিনি বললেনএক আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান আনা। তারপর জিহাদকরা। অতপর কবুল হজ্ব অন্যান্য আমল হতে এত উৎকৃষ্ট  মর্যাদাপূর্ণ যেরূপ সূর্যেরউদয়াচল হতে অস্তাচলের ব্যবধান।-মুসনাদে আহমদহাদীস : ১৯০১০তবারানী২০/৮০৯মাজমাউয যাওয়াইদহাদীস : ৫২৬৩
 সম্পর্কিত অন্য একটি দীর্ঘ হাদীসে বর্ণিত হয়েছেআমর ইবনে আবাসা রাবর্ণনাকরেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
অতপর এমন দুটি আমলযা অন্য সকল আমল হতে শ্রেষ্ঠ। তবে যে ব্যক্তি তার অনুরূপআমল করে তা ব্যতীত : মকবুল হজ্ব অথবা মকবুল উমরা।-মুসনাদে আহমদহাদীস :১৭০৭মুসান্নাফ আবদুর রাযযাকহাদীস : ২০১০৭মাজমাউয যাওয়াইদহাদীস :৫২৬১
নারীবৃদ্ধদুর্বল ব্যক্তি  শিশুদের জিহাদ হল হজ্ব  উমরাহ
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রাহতে বর্ণিততিনি বলেন-
ইয়া রাসূলাল্লাহআমরা তো জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করি। আমরা কি  জিহাদকরব নাতিনি বললেননা। বরং তোমাদের নারীদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হল হজ্বেমাবরূর।-সহীহ বুখারীহাদীস : ১৫২০মুসনাদে আহমদহাদীস : ২৪৪২২সুনানেনাসায়ীহাদীস : ৩৬০৭সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ৩৭০২মুসনাদে আবু ইয়ালা,হাদীস : ৪৭১৭শরহু মুশকিলিল আছারহাদীস : ৫৬০৯
অন্য বর্ণনায় রয়েছে-
আয়েশা রাবলেনআমি বললামইয়া রাসূলাল্লাহআমরা কি আপনাদের সাথে জিহাদকরব নাতিনি বললেনতোমাদের জন্য সবচেয়ে সুন্দর  উত্তম জিহাদ হল হজ্বেমাবরূর। আয়েশা রাবলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাললাম থেকে  কথাশুনার পর হতে আমি হজ্ব ছাড়িনি।-সহীহ বুখারীহাদীস : ১৮৬১মুসনাদে আহমদহাদীস : ২৪৪৯৭সুনানে কুবরাবায়হাকী /৩২৬
আবু হুরায়রা রাহতে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
বৃদ্ধদুর্বল  নারীর জিহাদ হল হজ্ব  উমরা।-মুসনাদে আহমদহাদীস৯৪৫৯;মুসান্নাফ আবদুর রাযযাকহাদীস : ৯৭০৯সুনানে নাসায়ী /১১৩তবারানী আওসাত,হাদীস : ৮৭৪৬সুনানে কুবরাবায়হাকী /৩৫০
হুসাইন বিন আলী রাহতে বর্ণিততিনি বলেন-
এক ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেনআমিভীরু  দুর্বল (জিহাদে যাওয়ার শক্তি-সামর্থ্য নেই) তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনতুমি অস্ত্র  শত্রুর সাথে লড়াইবিহীন জিহাদ-হজ্ব পালনকরতে এস।-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাকহাদীস : ৮৮০৯তবারানীহাদীস : ২৯১০;সুনানে সাঈদ ইবনে মনসূরহাদীস : ২৩৪২মাজমাউয যাওয়াইদহাদীস : ৫২৫৮

হজ্ব  উমরাকারীর দুআ কবুল করা হয়
জাবির রাবর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
 হজ্ব  উমরাকারীগণ আল্লাহর প্রতিনিধি দল। তারা দুআ করলে তাদের দুআ কবুল করাহয় এবং তারা কিছু চাইলে তাদেরকে তা দেওয়া হয়।-মুসনদে বাযযারহাদীস : ১১৫৩;মাজমাউয যাওয়াইদহাদীস : ৫২৮৮তবারানীহাদীস : ১৭২১

ইবনে ওমর রাহতে বর্ণিতনবী করীম সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী (গাযী), হজ্ব  উমরা আদায়কারীগণ আল্লাহর প্রতিনিধিদল। তারা দুআ করলে দুআ কবুল করা হয় এবং তারা কিছু চাইলে তাদেরকে তা দেওয়াহয়।-সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস : ২৮৯৩সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ৪৬১৩
আবু হুরায়রা রাবর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেন-
তিন প্রকারের লোক আল্লাহ তাআলার প্রতিনিধি : গাযীহজ্ব  উমরাকারী।-সহীহ ইবনেহিববানহাদীস : ৩৬৯২সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৫১১মুসতাদরাকে হাকেম,হাদীস : ১৬৫৩সুনানে নাসায়ী /১১৩সুনানে কুবরাবায়হাকী /২৬২

হাজীদের গুনাহ মাফ হয় এবং তারা যাদের গুনাহ ক্ষমা চায় তাদেরকে মাফকরা হয়
আবু হুরায়রা রাবর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেন
আল্লাহ তাআলা হাজীদের গুনাহ ক্ষমা করেন এবং হাজী যাদের জন্য ক্ষমা প্রর্থনা করেন,তাদেরকেও ক্ষমা করেন। -মুসনাদে বাযযারহাদীস : ১১৫৫তবারানী সগীরহাদীস :১০৮৯সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৫১৬মুসতাদরাকে হাকেমহাদীস : ১৬৫৪
অন্য বর্ণনায় রয়েছেহজ্ব  উমরাকারীগণ যখন দুআ করেতাদের দুআ কবুল করাহয়। তারা যখন কারো জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে তাদেরকে ক্ষমা করা হয়। -সুনানে ইবনেমাজাহহাদীস : ২৮৯২সুনানে নাসায়ী/১১৩

হজ্ব  উমরার জন্য খরচ করার ফযীলত
আয়েশা রাহতে বর্ণিত-
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমরা করার সময় তাকে তার উমরা সম্পর্কেবলেছেনতুমি তোমার পরিশ্রম  খরচ অনুপাতে নেকি পাবে।-মুসতাদরাকে হাকিম,হাদীস : ১৭৭৬সুনানে দারাকুতনী/২৮৬
আয়েশা রাহতে অন্য বর্ণনায় আছে রয়েছে তুমি তোমার উমরার সওয়াব তোমার খরচঅনুপাতে পাবে।-মুসতাদরাকে হাকিমহাদীস : ১৭৭৭সুনানে দারাকুতনী/২৮৬
বুরাইদা রাহতে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
হজ্বের জন্য খরচ করাআল্লাহর রাস্তায় খরচ করার মতইযার সওয়াব সাতশ গুণ পর্যন্তবৃদ্ধি পায়।-মুসনাদে আহমাদহাদীস : ২৩০০০শুয়াবুল ঈমান বাইহাকীহাদীস :৪১২৫তবারানী আউসাতহাদীস : ৫২৭০
অন্য বর্ণনায় রয়েছেআনাস রাহতে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেন-
হজ্ব হল আল্লাহর রাস্তা। তাতে (আল্লাহর রাস্তায়এক দিরহাম খরচের সওয়াব সাতশগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।-তবারানীআউসাতহাদীস : ৫৬৯০
জাবির রারাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন-
কোন হজ্বকারী ব্যক্তি নিঃস্ব হয় না। জাবের রা.কে ইমআর শব্দের উদ্দেশ্য কী জিজ্ঞেসকরা হলে তিনি বলেনঅভাব-অনটন। -মুসনাদে বাযযারহাদীস : ১০৮০তবারানীআউসাতহাদীস : ৫২০৯
ইবনে ওমর রাবলেনআমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতেশুনেছি-
হজ্বে গমনকারী ব্যক্তির উট চলার পথে যখনই পা উঠায় এবং পা রাখে এর বিনিময়েআল্লাহ তাআলা  হজ্ব কারীদের জন্য সওয়াব লিখে দেন। অথবা তার একটি করেগুনাহ মুছে দেন অথবা তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।
হজ্ব  উমরা পালনকালে মৃত্যুবরণকারীর ফযীলত
ইবনে আববাস রাহতে বর্ণিতএক ব্যক্তি আরাফাতের ময়দানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথেউফূফরত ছিলেন। হঠাৎ তিনি বাহন থেকে নীচে পড়ে গেলেন। এতে তার ঘাড় মটকেগেল এবং তিনি মারা গেলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,তাকে বড়ইপাতা সিদ্ধকরা পানি দিয়ে গোসল দাওতার দুই কাপড় দিয়ে তাকে কাফনপরাও। তাকে সুগন্ধি লাগিও না এবং তার মাথাও আবৃত করো না। কেননা তাকেকিয়ামতের দিন তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠানো হবে।-সহীহ বুখারীহাদীস : ১২৬৭;সহীহ মুসলিমহাদীস : ১২০৬সুনানে তিরমিযীহাদীস : ৯৫১সুনানে ইবনে মাজাহ,হাদীস : ৩০৮৪
আবু হুরায়রা রাহতে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-যে ব্যক্তি হজ্বের উদ্দেশ্যে বের হলঅতঃপর মৃত্যুবরণ করলকিয়ামত পর্যন্ত তার হজ্বের সওয়াব লেখা হবে। আর যে ব্যক্তি উমরার উদ্দেশ্যে বের হলআর সে অবস্থায় তার মৃত্যুহল কিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য উমরার সওয়াবলেখা হবে। যে ব্যক্তি জিহাদের উদ্দেশ্যেবের হলএবং তাতে তার মৃত্যু হলকিয়ামত পর্যন্ত তার জন্য মুজাহিদের সওয়াব লেখাহবে।-মুসনাদে আবু ইয়ালাহাদীস : ৬৩৫৭তবারানী আউসাতহাদীস : ৫৪৮০;মাজমাউয যাওয়ায়েদহাদীস : ৫২৭৪
তালবিয়া পাঠ  উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠের ফযীলত
আবু বকর সিদ্দীক রাহতে বর্ণিত-
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলকোন হজ্ব সর্বোত্তম?তিনি বললেনযে হজ্বে উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করা হয় এবং কুরবানী করা হয়। -সুনানেতিরমিযীহাদীস : ৮২৭সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস : ২৯২৪সহীহ ইবনে খুযাইমা,হাদীস : ২৬৩১মুসতাদরাকে হাকেমহাদীস : ১৬৯৭সুনানে দারিমীহাদীস : ৮১৫১;মুসনাদে বাযযারহাদীস : ৭১মুসনাদে আবু ইয়ালাহাদীস : ১১৭
সাহল ইবনে সা রাবর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেনযে কোনো মুসলমান তালবিয়া পাঠ করলতার তালবিয়া পাঠের অনুসরণে তার ডান বামের বৃক্ষরাজি সবকিছুই তার সাথে তালবিয়া পাঠ করেযতক্ষণ না যমীন তার এদিকতথা ডান  বাম পার্শ্ব হতে ধ্বংস হয়ে যায়। -সুনানে তিরমিযীহাদীস : ৮২৮সুনানেইবনে মাজাহ : ২৯২১সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৬৩৪মুসতাদরাকে হাকেম,হাদীস : ১৬৯৮সুনানে কুবরাবাইহাকী/৪৩
খাল্লাদ ইবনে যায়েদতার পিতা হতে বর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেনআমার নিকট জিব্রীল আগমন করে  মর্মে আদেশ করেছেনআমি যেন আমারসাহাবীদের হুকুম করি যেতারা তালবিয়া পাঠ করার সময় যেন উচ্চস্বরে পাঠ করে।-মুসনাদে আহমাদহাদীস : ১৬৫৫৭সুনানে তিরমিযীহাদীস : ৮২৯সুনানে ইবনেমাজাহহাদীস : ২৯২২সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৬২৫সহীহ ইবনে হিববান,হাদীস : ৩৮০২তবারানীহাদীস : ৫১৭৩মুসতাদরাকে হাকেমহাদীস : ১৬৯৪
আবু হুরায়রা রাবর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
জিব্রীল আমাকে উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠের আদেশ করেছেন। কেননা তা হজ্বের নিদর্শন।-        মুসনাদে আহমদহাদীস : ৮৩১৪সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৬৩০
যায়েদ ইবনে খালেদ রাহতে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেন-
জিব্রীল এসে আমাকে বললেনহে মুহাম্মাদআপনার সাহাবীদের হুকুম করেন,তারা যেন তালবিয়া পাঠ করার সময় উচ্চস্বরে পাঠ করে। কেননা তা হজ্বের নিদর্শন।-মুসনাদে আহমদহাদীস : ২১৬৭৮সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস : ২৯২৩সহীহইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৬২৮সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ৩৮০৩তবারানীকাবীরহাদীস : ৫১৭০মুসতাদরাকে হাকেমহাদীস : ১৬৯৫
আবু হুরায়রা রাহতে বর্ণিতনবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
যে কোনো ব্যক্তি তালবিয়া পাঠ করলেই তাকে সুসংবাদ দেওয়া হয় এবং যে কোনোব্যক্তি তাকবীর বললেই তাকে সুসংবাদ দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসা করা হলইয়া রাসূলাল্লাহ!জান্নাতের (সুসংবাদ দেওয়া হয়)? তিনি বললেনহ্যাঁ।-তবারানী আউসাতহাদীস:৭৯৪৩মাজমাউয যাওয়ায়েদহাদীস : ৫৩৭১
আবু হুরায়রা রাবর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনযেকোনো ব্যক্তি তালবিয়া পাঠ করেসে দিনই (সূর্যাস্তের সাথে সাথেতার গুনাহ মাফ হয়েযায়।-শুয়াবুল ঈমান বায়হাকীহাদীস : ৪০২৯
১০বাইতুল্লাহ তাওয়াফের ফযীলত
ইবনে উমর রাহতে বর্ণিততিনি বলেনআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি- 
যে ব্যক্তি যথাযথভাবে সাতবার বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাত সালাতআদায় করে তার একটি গোলাম আযাদ করার সমান সওয়াব হয়। তাওয়াফের প্রতিকদমে আল্লাহ তার একটি করে গুনাহ মাফ করেনএকটি করে নেকী লেখেন এবংদশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। -মুসনাদে আহমদহাদীস : ৪৪৬২সুনানে তিরমিযীহাদীস :৯৫৯সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৭৫৩মুসতাদরাকে হাকেমহাদীস : ১৮৪২;মুসনাদে আবু ইয়ালাহাদীস : ৫৬৮৮মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহাদীস : ১২৮০৬
মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদির তার পিতা হতে বর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনযে ব্যক্তি সাতবার বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করবেতাতে কোনো ধরনের অনর্থক কাজকরবে নাতবে তার একটি গোলাম আযাদ করার সমপরিমাণ সওয়াব হবে। -মুসান্নাফেইবনে আবি শাইবাহাদীস : ১২৮০৭তবারানীহাদীস : ৮৪৫মাজমাউয যাওয়ায়েদ,হাদীস : ৫৫০৪
ইবনে আববাস রাবর্ণনা করেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদকরেছেনআল্লাহ তাআলা বায়তুল্লাহর হজ্বকারীদের উপর প্রতিদিন একশত বিশটি রহমত নাযিলকরেনতার ষাটটি তাওয়াফকারীদের জন্যচল্লিশটি মুসল্লীদের জন্য এবং বিশটিদর্শকদের জন্য।-শুয়াবুল ঈমান বায়হাকীহাদীস : ৪০৫১তারগীব ১৭৮৬
১১হাজরে আসওয়াদ  রূকনে ইয়ামানী স্পর্শ করার ফযীলত
ইবনে ওমর রাবর্ণনা করেনআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিহাজরে আসওয়াদ রূকনে ইয়ামানীর স্পর্শ পাপসমূহকে মুছে দেয়।-সুনানে তিরমিযীহাদীস : ৯৫৯;মুসনাদে আহমদহাদীস : ৫৭০১সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৭২৯মুসতাদরাকেহাকেমহাদীস : ১৮৪২
ইবনে আববাস রাহতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঅবশ্যই আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন হাজরে আসওয়াদকে উঠাবেন। তার দুটিচোখ থাকবেযা দিয়ে সে দেখতে পাবে। একটি জিহবা বা মুখ থাকবেযা দিয়ে সে কথাবলবে এবং যারা তাকে যথার্থভাবে স্পর্শ করেছে তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। -সুনানেতিরমিযীহাদীস : ৯৬১মুসনাদে আহমদহাদীস : ২২১৫সহীহ ইবনে হিববানহাদীস৩৭০৪সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৭২৫সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস : ২৯৪৪;মুসতাদরাকে হাকিমহাদীস : ১৭২৩
ইবনে আববাস রাবলেনরাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনহাজরেআসওয়াদ হল জান্নাতের পাথরতা দুধের চাইতেও বেশি সাদা ছিলকিন্তুআদমসন্তানের গুনাহ একে কালো করে দিয়েছে। -সুনানে তিরমিযীহাদীস : ৮৭৭;সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৭৩০সুনানে নাসায়ীহাদীস : ২৯২৫
অন্য বর্ণনায় রয়েছেহাজরে আসওয়াদ বরকের চাইতে সাদা ছিলকিন্তু শিরকপন্থীদেরপাপ তাকে কালো বানিয়ে ফেলেছে। -মুসনাদে আহমদহাদীস : ২৭৯৫শুয়াবুল ঈমান,বায়হাকীহাদীস : ৪০৩৪
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাহতে বর্ণিততিনি বলেনআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-
হাজরে আসওয়াদ  মাকামে ইবারাহীমী জান্নাতের দুটি ইয়াকুত পাথর।  দুটিরজ্যোতি আল্লাহ তাআলা নিস্প্রভ করে দিয়েছেন। তিনি যদি  দুটির জ্যোতি নিস্প্রভ নাকরতেনতাহলে তা পূর্ব-পশ্চিমের মাঝে যা কিছু আছে সব আলোকিত করে দিতো।-মুসনাদে আহমদহাদীস : ৭০০০সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ৩৭১০সুনানেতিরমিযীহাদীস : ৮৭৮সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৭৩২মুসতাদরাকে হাকিম,হাদীস : ১৭০২
ইয়াওমে আরাফার ফযীলত
অব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রাহতে বর্ণিতনবী করীম সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন-
আরাফার অধিবাসীদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের নিকট গর্ব করেন এবংতাদেরকে বলেনতোমরা আমার বান্দাদের দিকে তাকিয়ে দেখতারা এলোমেলো চুলে,ধূলোমলিন অবস'ায় আমার কাছে এসেছে। -মুসনাদে আহমদহাদীস : ৭০৮৯;তাবরানীহাদীস : ৫৭৫মাযমাউয যাওয়ায়েদহাদীস : ৫৫৪৬
অনুরূপ হাদীস হযরত আবু হুরায়রা রাহতে বর্ণিত হয়েছেমুসনাদে আহমাদহাদীস :৮০৪৭;  মুসতাদরাকে হাকেমহাদীস : ১৭৫১সহীহ ইবনে খুযাইমাহাদীস : ২৮৩৯;সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ৩৮৫২
আয়েশা রাবলেনরাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
আরাফার দিন অপেক্ষা এমন কোনো দিন নেই যেদিন আল্লাহ তাআলা অত্যাধিকপরিণামাণে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করেন এবং তিনি নিকটবর্তী হন। আর ফেরেশতাদেরনিকট তাদেরকে নিয়ে গর্ব করে বলেনএরা কি চায়?-সহীহ মুসলিমহাদীস : ১৩৪৮;সুনানে ইবনে মাজাহহাদীস : ৩০১৪সহীহ ইবনে হিববানহাদীস : ৩৯২৬সুনানেনাসায়ীহাদীস : /২৫১।