মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০১২

কুরআন মজীদ ও সহীহ হাদীসের আলোকে রোযার গুরুত্ব ও ফযীলত

রমযনের রোযা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম ঈমান, নামায যাকাতের পরই রোযার স্থান রোযার আরবি শব্দ সওম, যার আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা পরিভাষায় সওম বলা হয়-প্রত্যেক সজ্ঞান, বালেগ মুসলমান নর-নারীর সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযার নিয়তে পানাহার, স্ত্রী সহবাস রোযাভঙ্গকারী সকল কাজ থেকে বিরত থাকা সুতরাং রমযান মাসের চাঁদ উদিত হলেই প্রত্যেক সুস্থ, মুকীম প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং হায়েয-নেফাসমুক্ত প্রাপ্তবয়স্কা নারীর উপর পূর্ণ রমযান রোযা রাখা ফরয সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন
 -يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُو
(তরজমা) হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার-সূরা বাকারা () : ১৮৩
অন্য আয়াতে ইরশাদ করেছেন-
فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ
(তরজমা) সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই মাস পাবে, সে যেন অবশ্যই রোযা রাখে- সূরা বাকারা () : ১৮৫
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
إذا رأيتم الهلال فصوموا وإذا رأيتموه فافطروا، فإن غم عليكم فصوموا ثلاثين،
وفي رواية : صوموا لرؤيته وأفطروا لرويته، فإن عم عليكم فاكملوا العدد.
যখন তোমরা (রমযানের) চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোযা রাখবে আর যখন (শাওয়ালের) চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোযা বন্ধ করবে আকাশ যদি মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে ত্রিশ দিন রোযা রাখবে-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৯০৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১০৮০ (১৭-১৮)
উল্লেখিত আয়াত হাদীস এবং বিষয়ক অন্যান্য দলীলের আলোকে প্রমাণিত যে, রমযান মাসের রোযা রাখা ফরয, ইসলামের আবশ্যক বিধানরূপে রোযা পালন করা বিশ্বাস করাও ফরয
তাছাড়া কোনো শরয়ী ওযর ছাড়া কোন মুসলমান যদি রমযান মাসের একটি রোযাও ইচ্ছাকৃতভাবে

কুরআন মজীদ ও সহীহ হাদীসের আলোকে রমাযানুল মুবারক

হিজরীবর্ষের নবম মাসটির নাম রমাযানুল মুবারক মাসের মর্যাদা মাহাত্ম্য বলার অপেক্ষা রাখে না মাস আল্লাহ তাআলার অধিক থেকে অধিকতর নৈকট্য লাভের উত্তম সময়, পরকালীন পাথেয় অর্জনের কৃষ্ট মৌসুম ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-আযকার এবং তাযকিয়া আত্মশুদ্ধির ভরা বসন্ত মুমিন বান্দার জন্য রমযান মাস আল্লাহ তাআলার অনেক বড় নেয়ামত তিনি এই মাসের প্রতিটি দিবস-রজনীতে দান করেছেন মুষলধারা বৃষ্টির মত অশেষ খায়ের-বরকত এবং অফুরন্ত কল্যাণমুমিনের কর্তব্য, এই মহা নেয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞ আনন্দিত হওয়া ইরশাদ হয়েছে-
قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ
(তরজমা) (হে নবী) আপনি বলুন! এটা আল্লাহর অনুগ্রহ তাঁর রহমতেই হয়েছে সুতরাং এতে তারা যেন আনন্দিত হয় তারা যা কিছু সঞ্চয় করে, এটা তার চেয়ে উত্তম-সূরা ইউনুস (১০)-৫৮
মাসে বান্দা পার্থিব সকল চাহিদা বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর দয়া রহমত লাভ করবে, অতীতের সকল পাপাচার থেকে ক্ষমা চেয়ে নতুনভাবে ঈমানী জিন্দেগীর উত্তাপ গ্রহণ করবে, তাকওয়ার অনুশীলনের মাধ্যমে পুরো বছরের ইবাদত ইতাআতের শক্তি সঞ্চয় করবে, চিন্তা-চেতনা কর্ম-সাধনায় আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সমর্পিত করবে-এই হচ্ছে মুমিনের আনন্দ
আল্লাহ তাআলা এই পবিত্র মাসকে যেসব গুণ মর্যাদা দ্বারা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছেন, যত রহমত, বরকত এবং দয়া অনুগ্রহ দ্বারা একে মহিমান্বিত করেছেন, মাসের নেক আমলগুলোর যত সওয়াব প্রতিদান নির্ধারিত করেছেন তার হিসাব-নিকাশ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় তবুও কুরআন মজীদের বিভিন্ন আয়াতে এবং হাদীস শরীফের বিস্তৃত বর্ণনায় যে গুরুত্ব বৈশিষ্ট বর্ণিত হয়েছে, তার কিছু দৃষ্টান্ত এখানে উল্লেখ করার চেষ্টা করব আল্লাহ তাআলা সবাইকে উপকৃত করুন আমীন
 
. সিয়াম কিয়ামের মাস
মুসলিম উম্মাহর নিকট রমযান মাসের আগমন ঘটে প্রধানত রোযা তারাবীহ বার্তা নিয়ে এটি রমযান মাসের বিশেষ আমল তাই প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য, পূর্ণ নিষ্ঠা
আন্তরিকতার সাথে দুই বিষয়ে যত্নবান হওয়া আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের